ঢাকা: মহাশক্তি নিয়ে আঘাত হেনেছে হারিকেন বেরিল। তার হিংস্র শক্তির দাপটে ইউনিয়ন দ্বীপের সব বাড়িঘর ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার গতিবেগে একটানা বাতাসসহ চার ক্যাটাগরি হারিকেন হিসেবে বেরিল দ্বীপটিতে আঘাত হানে। খবর বিবিসির।
দ্বীপটিতে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। অনেকে সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইনস, গ্রেনাডা এবং সেন্ট লুসিয়াতে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। ঝড়ের তাণ্ডব দেখে স্থানীয়রা হতবাক হয়ে গেছেন।
সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন্সের কাছে অবস্থিত দ্বীপের প্রতিটি বাড়ি একেবারে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। মহাশক্তিশালী ঝড় বেরিলের ভয়াবহ ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে গোটা ইউনিয়ন দ্বীপে। প্রায় পুরো দ্বীপের বাসিন্দারা এখন গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন বলে একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন স্থানীয় এক বাসিন্দা।
[226777]
তিনি জানান, দ্বীপটির প্রায় সব বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে ঝড়ের তাণ্ডবে। বিদ্যুতের খুঁটি রাস্তায় ভেঙে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে।
ভয়ার্ত কণ্ঠে স্থানীয় এক জেলে জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে এই অঞ্চলের বাসিন্দা তিনি। ২০০৪ সালের হারিকেন ইভানের দাপটেও তেমন ক্ষতি হয়নি। কিন্তু হারিকেন বেরিলের মতো ভয়াবহ ঝড় তিনি আগে দেখেননি। ঝড়ের তাণ্ডবে তার সব কিছু তছনছ হয়ে গেছে। এখন তার থাকার জায়গাটা পর্যন্ত নেই।
তিনি আরও জানান, যেন একটা টর্নেডো এখান দিয়ে গেছে। দ্বীপের ৯০ শতাংশই ধ্বংস করে গেছে ঘূর্ণিঝড়টি। বেরিলের তাণ্ডবে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দ্বীপটিতে বসবাসকারী জনগণের প্রয়োজনীয় খাবার, শিশুদের জন্য দুধ, স্যানিটারি পণ্য, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং তাঁবু প্রয়োজন।
[226778]
ঝড় থামার পর স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন্সের প্রধানমন্ত্রী রালফ গনসালভেস ক্যারিবিয়ান দ্বীপজুড়ে মহাশক্তিশালী হারিকেন বেরিলের আঘাতের সারসংক্ষেপ জানিয়েছে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিপজ্জনক ও বিধ্বংসী হারিকেন বেরিল অপরিমেয় ধ্বংসের মধ্যে রেখে গেছে আমাদের দেশকে। যত দ্রুত সম্ভব ঝড় পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রস্তত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী এবং কোস্টগার্ডের সাহায্য লাগবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী রালফ জানান, দ্বীপটির সংস্কার কাজ নিয়ে বেশ চিন্তিত তিনি। এত টাকা কোথায় পাবেন, তা নিয়েও উদ্বিগ্ন রালফ।
তিনি বলেন, এতে প্রচুর আন্তর্জাতিক সাহায্যের প্রয়োজন হবে, বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থের দরকার হবে। এক বছর বা তারও বেশি সময় লাগবে সংস্কার কাজে। তাই আমাদের ধর্য্য সহকারে এ কাজে সরকারকে সহায়তা করতে হবে।
এমএস