ঢাকা: বাংলাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য আলামতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস। গতকাল সোমবার সংস্থাটির নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য তথপ্রমাণ পেয়েছেন গুতেরেস। এমন পরিস্থিতিতে তিনি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
এদিন ব্রিফিংয়ের শুরুতে বাংলাদেশ নিয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করেন দুজারিক। সেখানে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মহাসচিব গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি সবাইকে শান্ত ও বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। চলমান আন্দোলনকে ঘিরে হাজারো তরুণ ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার নিয়েও তিনি উদ্বিগ্ন। এ ছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর বলপ্রয়োগ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিশ্বাসযোগ্য আলামত পেয়েছেন তিনি। তিনি আহ্বান জানিয়েছেন সব ধরনের সহিংসতার যেন নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও দ্রুত তদন্ত করা হয় এবং দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়।
দুজারিক আরও বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছি। আমরা আশা করি, জাতিসংঘের শান্তিমিশনে অন্যতম সেনা সরবরাহকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবে ও তা সমুন্নত রাখবে।’
ব্রিফিংয়ে একজন প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে সেনা মোতায়েনের পরে শান্তি ফিরে এসেছে। এরপর সেখানে সরকারি ও বেসরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই ধাক্কা সামালে জাতিসংঘ কি বাংলাদেশকে কোনোরকম সহায়তা করবে?
[228400]
জবাবে দুজারিক বলেন, যেকোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে সংলাপ আয়োজনে জাতিসংঘ পাশে থাকবে। তবে কারও মৃত্যু ও সম্পদের ক্ষতিপূরণ সংশ্লিষ্ট কাজে বিশ্বজুড়ে কোথাও জাতিসংঘ অংশ নেয় না।
আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, চলমান আন্দোলনকে ঘিরে তরুণদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর চিরুনী অভিযান ও বলপ্রয়োগ নিয়ে মহাসচিবের অবস্থান কী?
জবাবে দুজারিক বলেন, মহাসচিব নিরাপত্তা বাহিনীর জোরপূর্বক বলপ্রয়োগ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি সব সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্ত চান।
এরপর শান্তি মিশন নিয়েও আলাদা প্রশ্ন করা হয় দুজারিককে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, জাতিসংঘ শান্তিমিশনে অংশ নেওয়া সেনারাই বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত। এই বিষয়ে তাদের অবস্থান কী?
জবাবে দুজারিক বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি। আমরা আশা করি তারা বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখবে।’
প্রশ্নকর্তা আবার জিজ্ঞাসা করেন যে জাতিসংঘের কাছে যে প্রমাণ আছে তা দিয়ে তদন্তে সহায়তা করা হবে কি না। জবাবে দুজারিক বলেন, তারা বাংলাদেশকে সব ধরনের তথ্য সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছেন।
এমএস