ঢাকা : ঝাড়খণ্ড রাজ্যের অন্যতম বৃহত্তম শহর জামশেদপুর। এটি ভারতের প্রথম পরিকল্পিত শিল্প শহর। তবে জামশেদপুর নামের চেয়ে এই শহরকে টাটা নগরী নামেই বেশি চিনে থাকেন মানুষ।
১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই শহরটি। শহরটির নামকরণ রতন টাটার দাদাজি শিল্পপতি জামশেদজি টাটার নামে নামকরণ করা হয়েছিল। তিনি টাটা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এবং এই শহরে এশিয়ার প্রথম ইস্পাত কারখানা স্থাপন করেছিলেন।
[234160]
১৫৫ বছরের পুরোনো টাটা শিল্পগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জামশেদজি টাটা। রতন টাটার দাদাজি জামশেদ জি টাটাও ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পপতি হিসাবে পরিচিত। ভারতের শিল্পের পথপ্রদর্শক হিসেবে গণ্য করা হয় তাঁকে। বর্তমানে ইস্পাত থেকে শুরু করে সফটওয়্যার, উড়োজাহাজ থেকে লবণের মতো খাতে তাদের ব্যবসা রয়েছে।
ঝাড়খণ্ডের এই শহর ছকে ছকে তৈরি করেছিলেন জামশেদজি টাটা। যে শহরে পানীয় থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ কোন কিছুরই অভাব নেই, সবকিছুই সাজানো-গোছানো।
১৯ শতকে জামশেদজি নুসেরওয়ানজি টাটা তার প্ল্যান্টের জন্য সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি পেতে পিটসবার্গে ইস্পাত নির্মাতাদের সাথে দেখা করেছিলেন। ১৯০৮ সালে জামশেদপুরের সাকচি এলাকায় 'টাটা স্টিল' (TISCO) শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এর প্রায় ১০ বছরের মধ্যে এই নির্মায়মান শহরে অধিবাসীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫০,০০০।
[234159]
এই শহরের জন্য জামশেদজির পরিকল্পনা স্পষ্ট ছিল। তিনি একটি অত্যাধুনিক ও আরাম আয়েশের শহর তৈরি করার জন্য জোর দিয়েছিলেন। যার ফলস্বরূপ, শহরের অনেক এলাকা সুপরিকল্পিত এবং সেখানে জুবিলি পার্ক এবং ডিমনা লেকের মতো জনসাধারণের অবকাশ যাপনের স্থান রয়েছে।
শহর নির্মাণের সময় জামশেদজি টাটা গাছসহ প্রশস্ত রাস্তা, লন এবং বাগানের জন্য প্রচুর স্থান, খেলার জন্য নির্ধারিত স্থান এবং বড় জায়গা সংরক্ষিত করেছিলেন। তৎকালীন সময়েই প্রতিটি ধর্মের জন্য আলাদা আলাদা উপাসনালয় তৈরিতে জোড় দিয়েছিলেন তিনি।
বর্তমানে এই শহরের উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হল জে আর ডি টাটা স্পোর্টস কমপ্লেক্স, জুবিলি পার্ক, টাটা স্টিল জুওলজিকাল পার্ক, জামশেদপুর কয়েন মিউজিয়াম ইত্যাদি।
[234146]
জেআরডি টাটা অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই শিল্পগোষ্ঠীর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার থেকে টাটা স্টিল,আকাশযান থেকে সল্ট প্যান - এমন নানামুখী খাতের এক বিপুল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন তিনি।
কিন্তু ১৯৯১ সালে তিনি কোম্পানির সিনিয়র প্রার্থীদের বাদ দিয়ে রতন টাটাকে তার উত্তরসূরি হিসাবে নিয়োগ দেন। রতন টাটার নেতৃত্বে টাটা গ্রুপ একটি বিশ্বব্যাপী ব্র্যান্ড হিসাবে আবির্ভূত হয় এবং তিনি ভোগ্যপণ্যের ওপর ব্যাপক জোর দেন। সূত্র: ইন্টারনেট ও উইকিপিডিয়া।
এমটিআই