কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিন ভোটে কে জনপ্রিয়

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২৪, ১১:২৯ এএম

ঢাকা : কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিন আমেরিকানদের কাছে জনপ্রিয়তায় ডেমোক্র্যাটরা সবসময় এগিয়ে থাকে। এবারও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই দুই গোত্রের ভোটারদের কাছে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস। তবে জরিপ বলছে, স্বাভাবিকের চেয়ে এদের সমর্থন বেশ খানিকটা হারিয়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা।

অন্যদিকে এদের কাছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে, যেমনটা ২০১৬ ও ২০২০ সালের নির্বাচনেও তার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল।

নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা জনমত জরিপে দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ৭৮ শতাংশ ভোট পেতে পারেন কমলা। অথচ হালের নির্বাচনগুলোয় ডেমোক্র্যাটরা এদের সমর্থন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পেয়েছেন। অ্যারিজোনায় প্রতি চার জন ভোটারের একজন লাতিন, নেভাদায় প্রতি পাঁচ জনে একজন। জর্জিয়ায় শতকরা ৩০ ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ। এসব অঙ্গরাজ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলে বেশ প্রভাব রাখে।

[234870]

এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে ৫ নভেম্বর। এখন পর্যন্ত সবগুলো জনমত জরিপে কমলাই এগিয়ে। তিনি দেশটির প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি ভোটে জিতলে দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হবেন। কিন্তু ২০১৬ সালে একই লক্ষ্যে নির্বাচন করা হিলারি ক্লিনটন এই ট্রাম্পের কাছেই হেরে গিয়েছিলেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি যদিও ট্রাম্পের চেয়ে ৩০ লাখ জনপ্রিয় ভোট বেশি পেয়েছিলেন, তবে ইলেক্টোরাল কলেজের নিয়মে তিনি পরাজিত হন। ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে হেরে যান ট্রাম্প। তবে এবার তিনি ভোটে জিতে আবার ‘আগে আমেরিকা’ নীতি সচল করতে ‘অত্যন্ত আশাবাদী’।

যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান এরই মধ্যে পরিষ্কার করেছেন ট্রাম্প। পেনসিলভানিয়ায় এই সপ্তাহে এক নির্বাচনী প্রচার সমাবেশে তিনি বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীরা কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিন আমেরিকানদের জন্য ক্ষতিকর। সাউথ ডাকোটার রিপাবলিকান গভর্নর ক্রিস্টি নোয়েমের আয়োজনে পেনসিলভানিয়ার ওকস টাউন হলে ওই অনুষ্ঠানে দর্শকরা সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তিনি উত্তর দেন। সেখানে অভিবাসীদের নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘কৃষ্ণাঙ্গ ও হিস্পানিক পরিবার এবং শেষ পর্যন্ত বলতে গেলে আমাদের সবার ওপর এখন যারা আমাদের দেশে আসছেন, তাদের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।’

নির্বাচনে জিততে কৃষ্ণাঙ্গ ও লাতিন আমেরিকান বংশোদ্ভূত ভোটারদের নিজের পক্ষে টানতে চাইছেন ট্রাম্প। তিনি গর্ব করে বলেছেন, এই দুই পক্ষের ভোটারদের মধ্যে ‘তার পক্ষে সমর্থন অনেক বেড়েছে’। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যত অনুপ্রবেশ ঘটছে সেটাকে তিনি ‘একটি আক্রমণ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই উগ্র বাম পাগলেরা চায় সবাই দেশে আসুক এবং তাদের (অবৈধ অভিবাসীদের) মধ্যে অনেকেই অপরাধী।’

যেসব বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন, তার মধ্যে অবৈধ অভিবাসী অন্যতম। ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারেও তিনি অবৈধ অভিবাসীর বিষয়ে একই অবস্থানে ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কথা বলে আসছেন। প্রেসিডেন্ট থাকার সময় তিনি প্রাচীর নির্মাণসংক্রান্ত উদ্যোগও গ্রহণ করেছিলেন।

[234832]

জনমত জরিপে এখনও গড়ে এগিয়ে আছেন কমলা। কিন্তু সম্প্রতি বিভিন্ন জরিপে এটাও দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্পের চেয়ে তিনি এক মাস আগে যতটা এগিয়ে ছিলেন, নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে সেই ব্যবধান তত কমে আসছে। ফলে অনেকে মনে করছেন, ভোটের হাওয়া ধীরে ধীরে ট্রাম্পের পক্ষে চলে যাচ্ছে। এমনকি ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি সম্প্রতি চীনের সাধারণ মানুষে সঙ্গে কথা বলে এক বিশেষ প্রতিবেদনে লিখেছে, চীনা নাগরিকরাও চান ট্রাম্প নির্বাচনে জিতুক। কারণ হিসেবে সেখানকার মানুষ বলছে, ইউক্রেনে ও গাজায় যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার পেছনে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দায় রয়েছে। আর কমলা নিশ্চিতভাবে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করবেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বহুবার বলেছেন, আবার ক্ষমতায় আসলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেন ও গাজায় যুদ্ধ থামিয়ে দেবেন। এর আগে তার শাসনামলে তাকে কোনো সামরিক যুদ্ধে জড়াতে দেখা যায়নি। এ কারণে চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করা সত্ত্বেও, সাবেক এই প্রেসিডেন্টকেই তুলনামূলক কম অপছন্দ চীনাদের।

[234860]

কিন্তু কমলা চেষ্টার কমতি করছেন না। প্রচারসভায় ট্রাম্পের নীতিগুলো ত্রুটি নিয়ে বেশ সোচ্চার। যেমন সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘আপনারা তার কথা শুনেছেন। যারা তাকে সমর্থন করেন না, বা তার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করবে না, তারাই নাকি দেশের শত্রু। যত দিন যাচ্ছে, ট্রাম্প অস্থির ও লাগামহীন হয়ে পড়ছেন। তিনি এমন স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতা চান যা তাকে দায়মুক্ত করবে।’ সূত্র : সাম্প্রতিক দেশকাল

এমটিআই