ঢাকা : আর মাত্র দুইদিন। আগামী পাঁচ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মূহুর্তের প্রচারণায় ব্যাস্ত প্রধান দুই দলের প্রার্থী।
ধারণা করা হচ্ছে এবার ইতিহাসের রেকর্ড হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমোক্রেট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের মধ্যে।
সাধারণত আমেরিকার এই বড় দুই দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকেই নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হয়। তবে এই দুই দলের প্রার্থী ছাড়া আরও কিছু প্রার্থী রয়েছেন যারা এবারের নির্বাচনে লড়াই করছেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক অন্যান্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সম্পর্কে।
কর্নেল ওয়েস্ট : মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন ৭১ বছর বয়সী কর্নেল ওয়েস্ট। ২০২৩ সালের জুন মাসে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি, শুরু করেন প্রচার-প্রচারনা। শুরুতে পিপলস পার্টি এবং গ্রিন পার্টির হয়ে মনোনয়নের চেষ্টা করেছিলেন ওয়েস্ট। পরবর্তীতে তাঁর রানিং মেট মেলিনা আবদুল্লাহর সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
ইউনিয়ন থিওলজিক্যাল সেমিনারিতে অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন কর্নেল ওয়েস্ট। এছাড়া ইয়েল, প্রিন্সটন এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন তিনি।
[236136]
নির্বাচনী প্রচারে গাজায় ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির সমালোচনা করেছেন কর্নেল ওয়েস্ট। ওই অঞ্চলে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলকে প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়া ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠাসহ উল্লেখযোগ্য সংস্কারের পক্ষে তিনি জোর প্রচার চালিয়েছেন।
জিল স্টেইন : গ্রিন পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে লড়ছেন ৭৪ বছর বয়সী জিল স্টেইন। রাজনৈতিক কর্মজীবন শুরুর আগে, স্টেইন চিকিৎসক ও পরিবেশকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে ২০১২ এবং ২০১৬ সালেও গ্রিন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন তিনি।
নির্বাচনি প্রচারণায় ইসরায়েল ও ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন জিল স্টেইন। এছাড়া, বিনামূল্যে জনসাধারণের শিক্ষা প্রদান এবং চিকিৎসা ঋণ বাতিল করার পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন তিনি। গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভের সময় গ্রেপ্তার হয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন জিল।
চেজ অলিভার : আমেরিকার লিবারটেরিয়ান পার্টি মনোনীত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হলেন ৩৯ বছর বয়সী চেজ অলিভার। চলতি বছরের মে মাসে সাত দফা ভোটাভুটির পর তাকে মনোনয়ন দেয় লিবারটেরিয়ান পার্টি। রাজনৈতিক কর্মজীবন শুরু করার আগে অলিভার রেস্তোরাঁ খাতে কর্মরত ছিলেন। নির্বাচনী প্রচারে তিনি আমেরিকার বড় দুই দলের প্রার্থীরই সমালোচনা করেছেন। তিনি অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ করা, মাদক নির্মুল করা এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বিদেশি দ্বন্দ্ব থেকে দূরে রাখার বিষয়টি তার নির্বাচনি প্রচারে তুলে ধরেছেন।
[236107]
ক্লাউদিয়া দে লা ক্রুজ : পার্টি ফর সোস্যালিজম অ্যান্ড লিবারেশন পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ক্লডিয়া দে লা ক্রুজ। নিউইয়র্কের সাউথ ব্রঙ্কসে ডোমিনিকান অভিবাসী পিতামাতার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। সমাজতন্ত্রের অনুসারী সংগঠক, শিক্ষাবিদ এবং ধর্মতত্ত্ববিদ ক্লাউদিয়া তার নির্বাচনী প্রচারে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকানদের জন্য ক্ষতিপূরণ, মার্কিন সামরিক বাজেট ৯০ শতাংশ কমানোর কথা বলেন। অর্থনৈতিক গণতন্ত্রের প্রচারের জন্য ১০০টি বৃহত্তম করপোরেশন জব্দ করার পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন ক্লাউদিয়া।
রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র : কেনেডি পরিবারের বংশধর ৭০ বছর বয়সী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রও ডেমোক্র্যাটিক দল থেকে মনোনয়ন পেতে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করেন তিনি। তবে চলতি বছরের আগস্টে নির্বাচনি প্রচার স্থগিত করে নির্বাচন না করার এবং ট্রাম্পকে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন কেনেডি জুনিয়র।
নির্বাচনি প্রচারে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন বাতিল, আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। নির্বাচিত হলে মিথ্যাবাদী সরকারী কর্মকর্তাদের ছাটাইয়ের ঘশনাও দিয়েছিলেন তিনি। রবার্ট তাঁর প্রচারে সরকারী ব্যয় এবং বিদেশী হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলেছিলেন। সূত্র: সিএনএন
এমটিআই