ঢাকা : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্য ডেমোক্র্যাটিক না রিপাবলিকান পার্টিকে সমর্থন করে, তা মোটামুটি জানা যায়। এজন্য দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের শেষ সময়ের প্রচারণার কেন্দ্রে রয়েছে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলো।
জর্জিয়া থেকে বিবিসির নর্থ আমেরিকা করেসপন্ডেন্ট জন সুদওয়ার্থ লিখেছেন, শেষ দিকের প্রচারেও ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রচারে অভিবাসনবিরোধী বার্তাকেই সামনে রেখেছেন।
অন্যদিকে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে বিবিসির কোর্টনি সুব্রামানিয়ান লিখেছেন, কমলা হ্যারিসের প্রচার দল তার জয়ের বিষয়ে সতর্ক আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তারা এখন দোদুল্যমান রাজ্য বলে পরিচিতি অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটারদের নিজেদের পক্ষে টানার চেষ্টা করছেন।
[236285]
গতকাল রবিবার পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণার এক সমাবেশে ট্রাম্প জানান, ডেমোক্রেটিক পার্টি নামক একটি দুর্নীতিগ্রস্ত মেশিনের বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি। যদি নির্বাচিত হতে পারেন, তাহলে তিনি পুরো ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবেন।
অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেন, ‘জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসের কারণে বিশাল সংখ্যায় অপরাধীরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকছে।’
সমাবেশে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ‘আমি পুনরায় ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ বন্ধ করে দেব। আমি দেশকে নতুন স্বর্ণযুগে নিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন সাম্প্রতিক কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে সংকটময় মুহূর্ত কাটাচ্ছে আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতি। একদিকে ইউরোপের ইউক্রেন-রাশিয়া, ফিলিস্তিন ও লেবাননে ইতিহাসের নজিরবিহীন নির্মম ও রক্তাক্ত আগ্রাসন চালাচ্ছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার নীতি ঘিরে ইতোমধ্যে উত্তপ্ত পুরো মধ্যপ্রাচ্য।
[236273]
এছাড়া যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ইরান-ইসরায়েল। অপরদিকে তাইওয়ানকে ঘিরে উত্তপ্ত দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব এশিয়া। এর পাশাপাশি অস্থিতিশীলতা ও গৃহ যুদ্ধ এবং সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত সুদান, মালি, সোমালিয়া, কঙ্গো, বুরকিনা ফাসোসহ আফ্রিকার বহু দেশ।
শুধু ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই নয়, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ও চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধকে কেন্দ্র করে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে। এই রকম পরিস্থিতিতে এসব ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ঘটনা প্রবাহের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।
এজন্য বিশ্লেষকরা এবারের নির্বাচনকে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম সন্ধিক্ষণ হিসেবে অভিহিত করছেন। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিসহ মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক এবং বিশ্ব ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে দেশটির এতদিন ধরে চলা দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানের জন্য কঠিন পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে আগামীকালের নির্বাচনকে।
এমটিআই