পশ্চিমারা রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকে বৈশ্বিক সংঘাতে রূপ দিচ্ছে: পুতিন

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২৪, ১০:০৪ এএম

ঢাকা : যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের অস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের হামলার ঘটনা বৈশ্বিক সংঘাতের দিকে মোড় নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্র রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধকে বৈশ্বিক সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর আগ্রাসী পদক্ষেপ বাড়লে আমরাও দৃঢ়তার সঙ্গে জবাব দেব। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।

পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জবাবে ইউক্রেনের একটি সামরিক স্থাপনায় নতুন ধরনের হাইপারসনিক মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। এ প্রতিক্রিয়া আরও তীব্র হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন পুতিন। তবে এ ধরনের হামলার আগে দেশটির বেসামরিক নাগরিকদের সতর্ক করা হবে বলে জানান রুশ প্রেসিডেন্ট।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মস্কোর স্থানীয় সময় রাত ৮টার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন এ কথা বলেন।

[237901]

পুতিন জানান, জো বাইডেন প্রশাসনের অনুমোদনের পর ইউক্রেন ১৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ছয়টি এটিএসিএমএস এবং ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এইচআইএমএআরএস দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালায়। ‘ইউক্রেনে পশ্চিমারা যে আঞ্চলিক সংঘাতকে উসকে দিয়েছিল, ওই মুহূর্ত থেকে তা বৈশ্বিক রূপ নিয়েছে,’ বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।

তবে এটিএসিএমএস দিয়ে ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান পুতিন। কিন্তু ২১ নভেম্বর কুরস্ক অঞ্চলে স্টর্ম শ্যাডো হামলা একটি কমান্ড পয়েন্ট লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল এবং এতে হতাহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যেসব দেশ আমাদের স্থাপনায় হামলায় তাদের অস্ত্র ব্যবহার করতে দেয়, সেসব দেশের বিরুদ্ধে আমাদের অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার রয়েছে বলে আমরা মনে করি।’

২০১৪ সালে ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা পুরো ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলের ৮০ শতাংশ এবং জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন অঞ্চলের ৭০ শতাংশের বেশি এলাকা রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো বলছে, ২০২২ সালের আগ্রাসন ছিল সার্বভৌম ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলের সাম্রাজ্যবাদী ধাঁচের প্রচেষ্টা এবং তাদের আশঙ্কা, পুতিন ইউক্রেনে জয়ী হলে রাশিয়া একদিন ন্যাটো সদস্যের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করতে পারে।

[237903]

মস্কো চুক্তি লঙ্ঘন করছে এমন অভিযোগ তুলে ২০১৯ সালে রাশিয়ার সঙ্গে ১৯৮৭ সালের ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র।

ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তির কথা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, ‘আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্র ২০১৯ সালে মাঝারি-পাল্লার ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নির্মূলের চুক্তি একতরফাভাবে ধ্বংস করে ভুল করেছে।’

পুতিন আইএনএফ চুক্তিতে পূর্বে নিষিদ্ধ ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের উপর একতরফা স্থগিতাদেশ আরোপ করেছিলেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ নির্ভর করবে পশ্চিমাদের পদক্ষেপ ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুমকির ওপর।

ইউরোপ ও দূরপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র পরিকল্পিত মাঝারি ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন ও মোতায়েনের জবাবে রাশিয়া স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে বলেও জানায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।

এমটিআই