এবার ফিলিস্তিনের প্রাণকেন্দ্রে বসতির স্বপ্ন দেখছেন ইসরায়েলি সেটেলাররা?

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৯:৩৬ এএম

ঢাকা: ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন পরিমাণ সম্প্রসারণের পর এবার কিছু বসতি স্থাপনকারীদের নজর পড়েছে এমন কিছু এলাকার ওপর যেগুলোকে একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে দেখেছেন ফিলিস্তিনিরা। ওই এলাকাগুলোয় সার্বভৌমত্বের থাবা বসানোর স্বপ্ন পূরণের জন্য সেসব বসতি স্থাপনকারীরা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।

দুই বছর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি চরম-ডান জাতীয়তাবাদী জোটের নেতৃত্বে ইসরায়েলের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতিগুলোর দ্রুত বিস্তার ঘটেছে। সেই সময় বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞার আরোপ করতে বাধ্য হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

[237970]

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পশ্চিম তীরের জর্ডান উপত্যকায় কিছু বসতি স্থাপনকারীর দাবি মোতাবেক পাহাড়ের চূড়ায় ইসরায়েলি পতাকা উড়ানো হয়েছে। আর এই ঘটনা সেই অঞ্চলগুলোর বৃহত্তর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কিছু বসতি স্থাপনকারী তো মার্কিন নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের জয়ের জন্য প্রার্থনাও করেছিলেন।

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের শোষণকে সমর্থন করেন কর্মী ও লেখক ইসরাইল মেদাদ। সেখানকার শিলো অঞ্চলের একটি বসতিতে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বসবাস করছেন তিনি। নিজ বাড়িতে বসে রয়টার্সের সঙ্গে ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে কথা বলার সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের উচ্চ আশা আছে। এমনকি একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে আমরা উচ্ছ্বসিতও।’

ট্রাম্প প্রশাসনে ইসরায়েলপন্থি দৃষ্টিভঙ্গি রাখে এমন কর্মকর্তাদের মনোনয়নও উদযাপন করেছেন বসতি স্থাপনকারীরা। তাদের মধ্যে একজন ধর্মপ্রচারক খ্রিস্টান ও রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বলেন, পশ্চিম তীর দখলের অধীনে নয় এবং ‘বসতি’ শব্দটি ব্যবহারের চেয়ে তিনি বরং ‘সম্প্রদায়’ শব্দটিকেই বেশি পছন্দ করেন।

গত মাসে ইসরায়েলি সরকারের মন্ত্রী ও সেটলার অ্যাডভোকেট যারা মার্কিন খ্রিস্টান অধিকার গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন, তারা প্রকাশ্য মন্তব্যে পশ্চিম তীরের ওপর ‘সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধার’ করার এক সময়কার প্রান্তিক ধারণাটিকে ক্রমবর্ধমানভাবে ত্বরাণ্বিত করছেন। তবে নেতানিয়াহু সরকার এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেনি। এই প্রতিবেদনের জন্য মন্তব্য চেয়ে নেতানিয়াহুর কার্যালয়ের একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে করতে তিনি কোনও প্রকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মতো সৌদি আরবও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বকে প্রত্যাখ্যান করে। তাই দেশটির সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ট্রাম্প আব্রাহাম চুক্তির অধীনে একটি বৃহত্তর চুক্তির জন্য ওয়াশিংটনের কৌশলগত যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা সেটিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে এমন যে কোনও পদক্ষেপকে সমর্থন করবেন না।

ডেমোক্র্যাটিক ও রিপাবলিকান প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যের একজন সাবেক আলোচক ডেনিস রস ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতি বিবেচনার নিজস্ব মূল্যায়নের ভিত্তিতে বলেন, ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডের সম্প্রসারণের জন্য ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষা একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার হবে।’

তিনি বলেছিলেন, ‘ইসরায়েল যদি আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিম তীরকে শুষে নেয়, তবে সেই জোটে যোগদানের বিষয়ে সৌদি গুরুত্ব দেবে না।’

অধিভুক্ত করার প্রক্রিয়া একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের যে কোনও আশাকেই কবর দেবে, যেটিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব রয়েছে এবং গাজায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধের সমাধানের প্রচেষ্টাকেও জটিল করে তোলবে, যেটি এখন প্রতিবেশী লেবাননেও ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যখন ওয়াশিংটনের ক্ষমতায় যান, তখন ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরিত করেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তিনি বসতিগুলো যে অবৈধ—ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের এমন অবস্থানের অবসান ঘটান। তবে ২০২০ সালে বিদ্যমান সীমানা বরাবর একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ট্রাম্প যে পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তা এই অঞ্চলে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্বের জন্য নেতানিয়াহুর প্রচেষ্টার ধারাকে ব্যাহত করে।

তবে দ্বিতীয় মেয়াদে নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই অঞ্চলের জন্য তার পরিকল্পনা কী তা এখনও প্রকাশ করেননি। ট্রাম্প ট্রানজিশনের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রয়টার্সকে কোনও জবাব দেননি তিনি। শুধু বলেছেন, ট্রাম্প ‘বিশ্বব্যাপী শক্তির মাধ্যমে শান্তি পুনরুদ্ধার করবেন।’

তা সত্ত্বেও ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী ও সরকারের অন্যতম প্রধান উপনিবেশবাদীমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তিনি মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সমর্থনে ইসরায়েল আগামী বছরের প্রথম দিকে পশ্চিম তীরকে শোষণ করতে পারবে।

একটি সাক্ষাৎকারে পশ্চিম তীরের ইহুদি পৌরসভাগুলোর একটি ছাতা গোষ্ঠী ইয়েশা কাউন্সিলের প্রধান ইসরায়েল গাঞ্জ বলেছেন, তিনি মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলের সরকারকে নিজের মতো করে এগিয়ে যেতে দেবে।

৫ নভেম্বর নির্বাচনের আগে গাঞ্জ শিলোতে একটি পুরানো বাইজেন্টাইন ব্যাসিলিকার ধ্বংসাবশেষে ট্রাম্পের বিজয়ের জন্য একটি বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেন।

তিনি বলছিলেন, ‘আমরা প্রার্থনা করেছি, ঈশ্বর যেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের জনগণের জন্য আরও ভাল দিন নিয়ে আসেন।’

ট্রাম্পের প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে মনোনীত মিশেল ডেইল হাকাবি ও পিট হেগসেথ এর মতো মার্কিন রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য একটি জনপ্রিয় স্থানে পরিণত হয়েছে শিলো।

স্মোট্রিচের ধর্মীয় জায়োনিজম আন্দোলনের সঙ্গে সংযুক্ত একটি ইসরায়েলি সংবাদ আউটলেট আরুৎজ শেভাকে গত সপ্তাহে হাকাবি বলেছিলেন, অধিভুক্তকরণের যে কোনও সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে। হুকাবিকে অবিলম্বে এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধ করেও কোনও প্রতিক্রিয়া পায়নি রয়টার্স।

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ওয়াসেল আবু ইউসুফ বলেছেন, ইসরায়েল সরকারের এ ধরণের কোনও পদক্ষেপই ‘সত্যকে পরিবর্তন করবে না যে, এটি ফিলিস্তিনি ভূমি।’

এলির প্রতিবেশী বসতিগুলোর সঙ্গে একত্রে পশ্চিম তীরের কেন্দ্রের কাছে শিলোর অবস্থান। জেরুজালেম থেকে রুট ৬০ বরাবর এক ঘণ্টার একটি মসৃণ মোটরওয়ে পথ এটি, যা এই অঞ্চলের ফিলিস্তিনি শহরগুলোর সঙ্গে সংযোগকারী গর্তযুক্ত রাস্তাগুলোর একদম বিপরীত।

কারিউত গ্রামের একজন ফিলিস্তিনি কর্মী বাশার আল-ক্যারিউতি বলেন, শিলো ও এলিতে বসতির সম্প্রসারণ মধ্য পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি গ্রামগুলোকে ঘিরে ফেলেছে।

ইসরায়েলি সরকারের আনুষ্ঠানিক কাগজপত্রের অপেক্ষা না করেই বসতি স্থাপনকারীদের সম্প্রসারণের বর্ণনা দিয়েছেন আল-ক্যারিউতি। এই প্রবণতার বিষয়টি ট্র্যাককারী ইসরায়েলি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ পিস নাউও উল্লেখ করেছে।

আল-ক্যারিউতি ফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, ‘বসতির মাঠে এটি ঘটছে। পশ্চিম তীরের কেন্দ্রস্থলের এলাকাগুলো এখন বসতি স্থাপনকারীদের নিয়ন্ত্রণে।’

ইসরায়েলে অনেকেই পশ্চিম তীরকে পুরানো বাইবেলের পরিভাষায় জুডিয়া ও সামারিয়া বলে থাকেন। এটি একটি কিডনি আকৃতির অঞ্চল যেটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬০ মাইল) দীর্ঘ এবং ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) প্রশস্ত। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরায়েল কর্তৃক দখলের পর থেকে এটি ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘর্ষ কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

অধিকাংশ দেশ এটিকে অধিকৃত এলাকা হিসেবে বিবেচনা করে এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বসতিগুলোকে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত। জুলাইয়ে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত এটি বহাল রেখেছে।

জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে, ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। দক্ষিণে গাজার ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলসহ পশ্চিম তীরকে ফিলিস্তিনিরা একটি ভবিষ্যত স্বাধীন রাষ্ট্রের নিউক্লিয়াস হিসেবে দাবি করে।

তবে ৩০ বছর আগে অসলো অন্তর্বর্তী শান্তি চুক্তির পর থেকে পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতির বিস্তার ছড়িয়ে পড়েছে, যা এই এলাকার চেহারা পুরোটাই বদলে দিয়েছে।

মিসরের নির্বাসন থেকে ফিরে আসার পরে এবং ৩০০ বছর ধরে সেখানে বসবাসের মাধ্যমে প্রাচীন ইসরায়েলি ইহুদিরা শিলো প্রতিষ্ঠা করে। তবে তখন সেটি তাম্বুর স্থান হিসেবে সম্মানিত ছিল। ১৯৭০ এর দশকে আধুনিক শিলো প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০২২ সালে এর জনসংখ্যা ছিল প্রায় ৫ হাজার।

ইহুদি বসতির সমর্থকরা মনে করেন, আন্তর্জাতিক আইন যাই বলুক না কেন, বাইবেলের সংযোগই তাদের সেখানে বসবাসের অধিকার দেয়।

মেদাদ বলেছিলেন, ‘এমনকি যদি বাইজেন্টাইন, রোমান, মামেলুক ও অটোমানরা এটিকে শাসন করে থাকে তবুও এটি আমাদের দেশ ছিল।’

যেমন করে সেটলার অ্যাডভোকেটরা ‘সংযোজন’ শব্দটিকে প্রত্যাখ্যান করেন। তারা বলে থাকেন, এই শব্দটি একটি বিদেশি অঞ্চল দখলে নেওয়াকে বোঝায়।

২০২৩ সালে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন রেকর্ড মাত্রায় পৌঁছেছে। গত অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নতুন রাস্তা ও স্থল কাজের ফলে পুরো এলাকাজুড়ে পাহাড়ের চেহারা দৃশ্যমানভাবে বদলে গেছে।

আন্তর্জাতিক নিন্দা এবং মার্কিন ও ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞাগুলো সত্ত্বেও একই সময়ে শিলোর আশেপাশের এলাকাসহ পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা আরও ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি সপ্তাহের মতো সম্প্রতি, কিছু ব্যক্তি যারা একটি বিশিষ্ট অংশ দখলে নিয়েছে বলে মনে করা হয়, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

গাঞ্জসহ সেটলার নেতারা বলছেন, তাদের আন্দোলনে সহিংসতার কোনও স্থান নেই। বসতি স্থাপনকারী গোষ্ঠী যুক্তি দেখিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনি শহর ও শহরের কাছাকাছি এলাকায় তাদের উপস্থিতিসহ বাকি ইসরায়েলিদের জন্য নিরাপত্তা প্রদান করে থাকেন।

নেতানিয়াহুর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের অবস্থান সুসংহত করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যেগুলোতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের ভূমিতে ইহুদি জনগণের স্বাভাবিক অধিকার রয়েছে।’

নেসেটে কার্যালয়ে কথা বলার সময় স্মোট্রিচের পার্লামেন্টারি দলের চেয়ারম্যান ওহাদ তাল বলেন, ‘আমরা এই মাটিতে অনেক কিছুরই পরিবর্তন করছি যাতে এই সত্য বাস্তবে পরিণত হয় যে, জুডিয়া ও সামারিয়াতেও ইসরায়েল রয়েছে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘জুডিয়া ও সামরিয়াতে সার্বভৌমত্ব কার্যকরভাবে প্রয়োগের জন্য’ একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। আর ‘এটি একটি অপরিবর্তনীয় সত্য যে, সেখানে ইহুদি উপস্থিতি রয়েছে ও থাকবে।’

বসতি সংক্রান্ত অনেক কাজ যেগুলো আগে সামরিক বাহিনী পরিচালনা করত সেগুলো এখন সেটেলমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এটি একটি বেসামরিক সংস্থা যেটি সরাসরি অর্থমন্ত্রী স্মোট্রিচের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য। সংস্থাটির একটি অতিরিক্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পোর্টফোলিও রয়েছে, যা একে পশ্চিম তীর পরিচালনার দায়িত্বে রাখে।

অক্টোবরের এক প্রতিবেদনে পিস নাউ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে প্রায় ৬ হাজার একর (২ হাজার ৪০০ হেক্টর) জমিকে ইসরায়েলি রাষ্ট্রীয় ভূমি ঘোষণা করা হয়েছে, যা রেকর্ডে সবচেয়ে বড় বার্ষিক বৃদ্ধি এবং পরিমাণে বিগত তিন দশকে রাষ্ট্রীয় ভূমি হিসেবে ঘোষণা করা সব এলাকার অর্ধেক। রাষ্ট্রীয় ভূমি জমির এমন একটি শ্রেণিবিন্যাস যা বসতি স্থাপন করাকে সহজ করে তোলে।

পৃথক একটি বিশ্লেষণ পিস নাউ জানিয়েছে, গত বছরে অন্তত ৪৩টি নতুন সেটলার ফাঁড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে ১৯৯৬ সাল থেকে বছরে গড়ে ৭টিরও কম ফাঁড়ি প্রতিষ্ঠিত হতে দেখা গেছে।

ফাঁড়িগুলো কয়েক কিলোমিটার নতুন রাস্তা ও অন্যান্য অবকাঠামো দিয়ে সাজানো হয়েছে। সেগুলো প্রায়ই কাছাকাছি পাহাড়ের চূড়ায় বিদ্যমান বসতিগুলো পর্যবেক্ষণে কাজ করে এবং মূল অবস্থানকে প্রসারিত করায় কাজ করে। সেগুলো প্রায়ই ইসরায়েলি আইন অনুসারে অবৈধভাবে নির্মিত। তবে ইয়েশা কাউন্সিল বলেছে, চলতি বছর প্রায় ৭০টির সরকারি সহায়তা প্রসারিত হয়েছে।

এম