ঢাকা: গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে দিয়ে নতুন করে আকাশ ও স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। এতে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটি আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। এমনকি খোদ ইসরায়েলেই এই হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার নিজেদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতেই হামলা জোরদার করেছে। হামাসের হাতে বন্দি জিম্মিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। শুধু ইসরায়েলের অভ্যন্তরেই নয়, গাজায় নতুন করে হামলার ঘটনায় বিশ্ব জুড়ে ইসরায়েলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
[246422]
গাজায় হামলার প্রতিবাদে মধ্যপ্রাচ্যে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। তাদের হাতে জর্ডানের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা দেখা যায়। এ সময় ইসরায়েলবিরোধী নানা স্লোগান দেন তারা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে ইরাকের রাজধানী বাগদাদেও। সে বিক্ষোভ থেকেও ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন হাজারো মানুষ। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের বাইরে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনের পতাকার পাশাপাশি নেতানিয়াহু ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পবিরোধী প্ল্যাকার্ড দেখা গেছে বিক্ষোভকারীদের হাতে।
গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার প্রতিবাদে বড় বিক্ষোভ হয়েছে পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে। রাজধানী ইসলামাবাদে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ঘেরাও করে ক্ষোভ জানান বিক্ষোভকারীরা। এছাড়াও পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট ঘেরাও করা হয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পতাকায় আগুন দেন বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদেও। নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোর আহ্বানে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে ক্যালাও স্কোয়ারে জনতা জড়ো হয়। বিরোধী দল পোদেমোসও এই বিক্ষোভকে সমর্থন করে। তাদের শত শত সমর্থকও এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
এদিকে, গাজার বিবদমান পক্ষগুলোকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপের শক্তিধর তিন রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি। শুক্রবার দেশ তিনটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক যৌথ বিবৃতিতে যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডটিতে মানবিক সহায়তা ঢোকার অনুমতি দিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ই-থ্রি নামে পরিচিত দেশ তিনটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবিলম্বে গাজায় পানি ও বিদ্যুৎ সুবিধা পুনর্বহালসহ মানবিক সহায়তা প্রবেশে অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে চিকিৎসাসেবা এবং চিকিৎসার জন্য অস্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তরের সুযোগ নিশ্চিত করা হোক। এ সময় গাজায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনায় স্তম্ভিত এ মন্ত্রীরা ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান সংঘাত সামরিকভাবে সমাধান করা যাবে না। শান্তি প্রতিষ্ঠায় আস্থা রাখার মতো পথ হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি। এ সময় ইসরায়েলের হামলায় গাজায় জাতিসংঘের প্রকল্প পরিচালনা কার্যালয় ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঘটনায়ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন।
এসআই