ঢাকা : মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পরও থামেনি সেনাবাহিনীর হামলা। ৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৪০০-এর বেশি। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো বহু মানুষ আটকে আছেন।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছাকাছি মিয়ানমারের মান্ডালে শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে আটকে আছেন অনেকে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভূমিকম্পের পর অনেক মানুষ ঘরের বাইরে খোলা জায়গায় রাত কাটিয়েছে। বারবার আফটারশক হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ধসে পড়া রাস্তাঘাটের কারণে দুর্গত এলাকায় সাহায্য পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ সেতু এবং রাস্তাগুলো ভেঙে পড়ায় উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
[246816]
ভূমিকম্পের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উত্তর শান রাজ্যের নাউংচো এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুস বলেছেন, ‘যখন মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে, তখন বোমা বর্ষণ করা অমানবিক।’ তিনি সেনাবাহিনীকে সব ধরনের হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিরোধী প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর দাবি, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল সাগাইং এলাকাতেও সেনারা হামলা চালিয়েছে। এছাড়া, থাইল্যান্ড সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো থেকেও নতুন হামলার খবর আসছে।
মিয়ানমারের সামরিক সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তারা ত্রাণকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। জাতিসংঘের অভিযোগ, অতীতেও সেনাবাহিনী সাহায্য আটকে রেখেছে এবং প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর এলাকায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দেয়নি।
ভূমিকম্পের ধাক্কা লেগেছে থাইল্যান্ডেও। রাজধানী ব্যাংককে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার বেশিরভাগই ভবন ধসের কারণে। চাতুচাক মার্কেটের কাছে একটি ৩০-তলা ভবন ধসে পড়েছে, যেখানে প্রায় ১০০ জন শ্রমিক আটকে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাহিনী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত সাগাইং অঞ্চলের বড় অংশ এখন প্রতিরোধ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাবাহিনী ক্রমবর্ধমান পরাজয়ের ফলে বিমান হামলার ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। ভূমিকম্পের ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও এই সহিংসতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
এমটিআই