ভুলোনা আমায়...!
দন্ত্যস সজীব (সর্বদা)
এক যে ছিলো দুষ্ট ছেলে, বয়স তাহার উনিশ-বিশ
রাস্তা ঘাটে চলার সময় মেয়েদের দেখে দিত শিস।
২০০১-এ পরীক্ষার আগে, রাখুন সবাই জেনে
তারই মাঝে প্রেমের হাওয়া লাগলো তাহার মনে।
বন্ধু-বান্ধব স্যারেরা বলে পরীক্ষাটা দিয়ে
যত খুশি প্রেম কোরো প্রয়োজনে কোরো বিয়ে।
তাদের কথা শুনে ভাবে ঠিক আছে তাই হবে
কিন্তু পরক্ষণেই ভুলে যায় কে কী বলেছিলো কবে।
সংসারের বড় ছেলে নাম তার ইমতিয়াজ
ছোট ভাই আমিনুল আর মেজ ভাইয়ের নাম ফিরোজ।
লেখাপড়ায় মন বসে না, মারে শুধু আড্ডা
ছোট থেকেই ঢাকায় থাকে, বাড়ি তাদের বাড্ডা।
গ্রামের বাড়ি বরিশাল তার, নদী মাতৃক দেশ
তাইতো সবাই গ্রামটিকে ভালোবাসে বেশ।
দিনের বেলা পড়তো না সে, পড়তো গভীর রাতে
তাইতো সবার বকা খেতো তবে, লাজ হতো না তাতে।
পড়া শেষে ঘুমাতো না, লিখতো উপন্যাস
ধীরে ধীরে হচ্ছে তাহার কঠিন সর্বনাশ।
সবসময় সে ভাবতো তাহার ভালোবাসাকে নিয়ে
বাসায় বসেতো ভাবতোই আবার ভাবতো কোচিংয়ে গিয়ে।
হঠাৎ করে একদিন তাহার কপাল হলো মন্দ
দুটো কিডনি নষ্ট হলো, চক্ষু হলো অন্ধ।
বড় বড় ডাক্তাররা তার করছে চিকিৎসা
কিন্তু তাহার বেঁচে থাকার নাই কোনো ইচ্ছা।
হৃদয় দিয়ে ইমতিয়াজ আমিন ভালোবাসতো যাকে
সেই মেয়েটি বারে বারে কষ্ট দিতো তাকে।
ডাক্তার এসে একদিন তাহার বাবার কাছে বলে
অনেক টাকা লাগবে, নয়তো ভাসবেন চোখের জলে।
সুস্থ যদি চান ছেলেকে লাগবে অনেক মানি (Money)
বাবা-মা ভাইয়েরা কাঁদে, কাঁদে তাহার তানি!
আত্মীয়-স্বজন সবাই কাঁদে, কাঁদে চন্দ্র তারা
সেই সঙ্গে কাঁদে তাকে ভালোবাসতো যারা।
তারপর একদিন খাঁচা ভেঙে পাখি গেল উড়ে
আর কখনো মুক্ত পাখি আসবে না তার তরে।
দিন পনেরো পর...
সহসা একদিন সেই মেয়েটি আসলো তাদের ঘর।
ইমজিয়াজ আমিন সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতো যাকে
সেই লাল ডায়েরিটা এখন শুধু তানিয়াকে ডাকে।
ডায়েরি খুলে ‘তানি’ যখন চক্ষু মেলে চায়
রক্ত দিয়ে লেখা তাতে ভুলোনা আমায়...
বুকের রক্তে লেখা তাতে
ভুলোনা আমায়...!