দক্ষ চালক তৈরিতে জনপ্রতি খরচ ১০ হাজার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২১, ১১:৪১ এএম

ঢাকা : ‘যানবাহন চালনা প্রশিক্ষণ’ প্রকল্পে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ, যুবকদের কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির লক্ষ্যে ৪০ হাজার দক্ষ গাড়িচালক তৈরি করবে সরকার। এ লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে প্রকল্পটি অনুমোদন দিতে যাচ্ছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

প্রকল্পটিতে সরকারের খরচ হবে ১০৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পটিতে আনুষঙ্গিক খরচ ছাড়াই কেবল গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ খাতে খরচ করা হবে ৪০ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। ফলে ৪০ হাজার গাড়িচালক তৈরি করতে গিয়ে একেকজনের পেছনে প্রশিক্ষণ বাবদ খরচ পড়বে ১০ হাজার ২০৯ টাকা। দেশের ৮টি বিভাগের ৪০টি জেলায় এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।

চাপ্রকল্প সূত্র জানায়, ৪০ হাজার ব্যক্তিকে গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ প্রদান, ৮০টি গাড়ি কেনা, ৪৩টি কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক ব্যয়, ৪০৫টি অফিস সরঞ্জাম কেনা, চার হাজার ৭০৮টি আসবাবপত্র কেনা, প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি কেনা ইত্যাদি প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজ।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর বলছে, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনার হারও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পর্যাপ্ত কারিগরি জ্ঞানের অভাব ও সড়ক ব্যবহার বিধি ও ট্রাফিক আইনকানুন না জানার কারণেই অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।

নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে দক্ষ গাড়িচালক তৈরির জন্য এ প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশে প্রতি বছর লাখ লাখ যানবাহন চলমান যানবাহনের সঙ্গে যুক্ত হলেও এসব যানবাহন চালনার জন্য দেশে দক্ষ গাড়িচালক তৈরির কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সরকারি পর্যায়ে নেই। বেসরকারি পর্যায়ে ব্যক্তি উদ্যোগে কিছু প্রতিষ্ঠান আধা দক্ষ ও অদক্ষ গাড়িচালক তৈরি করছে। তাদের মাধ্যমে যানবাহন রাস্তায় চলাচলের ফলে মারাত্মক ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। ফলে দেশে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় বহু মানুষ আহত ও মৃত্যুবরণ করছে।

দেশে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি প্রশিক্ষিত ও দক্ষ গাড়িচালক তৈরির জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি হওয়ায় ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে ড্রাইভিং ট্রেড কোর্স চালু করার সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে।

ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে গত বছর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর।

প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদ্য সাবেক সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে দক্ষ গাড়িচালক তৈরি হবে। দক্ষ গাড়িচালক বিদেশে কর্মরত হলে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য এসব দক্ষ গাড়িচালক তৈরিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই