চট্টগ্রাম : চতুর্থ দফায় আরো দুই হাজার ১৪ জন রোহিঙ্গা নোয়াখালীর ভাসানচরে রওনা দিয়েছেন।
চট্টগ্রামে ট্রানজিট শেষে সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজে করে তারা ভাসানচরে যাচ্ছেন।
এর আগে রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কক্সবাজারের উখিয়া থেকে তাদের নিয়ে ৩৭টি বাস রওনা হয় চট্টগ্রামে।
অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা জানিয়েছেন, চতুর্থ দফায় প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যাচ্ছেন। এই স্থানান্তর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ২ হাজার ১৪ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে যাচ্ছেন।
ভাসানচরে যাওয়ার জন্য আজ সকাল ৬টা থেকে রোহিঙ্গারা নৌবাহিনীর জাহাজে উঠতে শুরু করেন। সকাল ১০টার আগেই রোহিঙ্গারা জাহাজে উঠে পড়েন। সকাল ১০টার দিকে নৌবাহিনীর জাহাজগুলো ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল দুপুর ১২টা ও বেলা আড়াইটার দিকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে রোহিঙ্গাবাহী ৩৭টি বাস, ১১টি কার্গো, দুটি অ্যাম্বুলেন্সসহ ছয়টি সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর গাড়ি চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। সন্ধ্যার মধ্যে রোহিঙ্গারা চট্টগ্রামের বিএন শাহীন কলেজের ট্রানিজট ক্যাম্পে পৌঁছেন। সেখানে চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শেষে নৌবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় তাদের জাহাজে করে ভাসানচরে নেয়া হচ্ছে।
ভাসানচর প্রকল্পের (আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩) উপ-প্রকল্পের পরিচালক কমান্ডার এম আনোয়ারুল কবির জানান, চতুর্থ ধাপে ৩ থেকে ৪ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে যেতে রাজি হয়েছেন। তাদের দুই ধাপে উখিয়া থেকে ভাসানচরে আনা হচ্ছে।
গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছান। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি ১ হাজার ৭৭৮ জন আসেন। এর বাইরে সাগর পথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জনসহ মোট ৬ হাজার ৬৮৮ রোহিঙ্গা ভাসানচরে বসবাস করছেন।
চতুর্থ দফায় রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর আজ : চতুর্থ দফায় ২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নেয়া হচ্ছে আজ। আজ চট্টগ্রাম থেকে ৫টি জাহাজে করে ২ হাজার ১২ জনকে ভাসানচরে নেয়া হবে।
এরই মধ্যে কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নোয়াখালীর ভাসানচর যেতে ৩০ টি বাসে রোহিঙ্গারা চট্টগ্রামে পৌঁছেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য শনিবার রাতেই উখিয়া ডিগ্রি কলেজ এবং কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। এ নিয়ে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে জড়ো করা হয় অন্তত ৫০ টির বেশী বাস। পরে রোববার দুপুর দেড়টায় উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে তাদের বহনকারি এসব বাস রওনা দেয়।
এরআগে, প্রথম দফায় গত ৪ঠা ডিসেম্বর কক্সবাজারের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে এক হাজার ৬৪২ জন, দ্বিতীয় দফায় গত ২৮ ডিসেম্বর এক হাজার ৮০৫ জন এবং তৃতীয় দফায় গত ২৯ ও ৩০শে জানুয়ারী তিন হাজার ২০০ জনের বেশী রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছিল।
সোনালীনিউজ/এমটিআই