ঢাকা : পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ঢাকার বায়তুল মোকাররমে তাণ্ডবের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের সংশ্লিষ্টতা পেলে তাকে গ্রেফতার করা হবে। শুধু মামুনুল হক নন, তদন্তে যার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সোমবার রাতে মামুনুলসহ হেফাজতে ইসলামের ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করব। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুরুল ইসলাম বলেন, এজাহারে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের অনেকের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে। তবে আমরা কোনো পদ বিবেচনায় নেব না। আমরা অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আসামিদের প্রকৃত পরিচয়, তারা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছে, ২৬ তারিখ তারা কোথায় ছিল, বায়তুল মোকাররমে সরাসরি উপস্থিত ছিল কি না, তারা নাশকতার নির্দেশ-উসকানি দিয়েছে কি না, হামলার অর্থদাতা বা মাস্টারমাইন্ড কি না, তা শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতারসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মামলার বাদীর বিষয়ে ডিসি বলেন, যিনি মামলা করেছেন তিনি একজন ব্যবসায়ী। তিনি টাইলসের আঘাতে আহত হয়েছেন। তার অন্য কোনো পরিচয় আছে কি না, তা আমরা খুঁজে দেখব।
মামলায় হেফাজতের নেতাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন কি না- জানতে চাইলে মতিঝিল বিভাগের ডিসি বলেন, নামাজের পর বেদীর ওপরে অনেকে কথা বলছিল, সেখান থেকেই সংঘর্ষের শুরু। তবে সেখানে কোনো সিনিয়র নেতাকে দেখিনি। অনেকে ভেতরে ছিল, সিনিয়র নেতারা ভেতরে ছিলেন কি না, তা তদন্তে উঠে আসবে।
এর আগে সোমবার রাত পৌনে ১০টায় আরিফ-উজ-জামান নামের ওয়ারী বাসিন্দা এক ব্যক্তি হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনসহ কয়েকটি ধারায় পল্টন থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় মামুনুল হকসহ অন্যান্য ১৬ আসামিরা হলেন- হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব নাসির উদ্দিন মনির, নায়েবে আমির মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা নুরুল ইসলাম জেহাদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নায়েবে আমির মাজেদুর রহমান, মাওলানা হাবিবুর রহমান, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়্যুবী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা জসিম উদ্দিন, টঙ্গীর সহ-সাংগঠনিক মাওলানা মাসুদুল করিম, অর্থ সম্পাদক মুফতি মনির হোসাইন কাশেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা যাকারিয়া নোমান ফয়েজী, মাওলানা ফয়সাল আহমেদ, সহকারী দাওয়া সম্পাদক মাওলানা মুশতাকুন্নবী, ছাত্র ও যুব সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. জোবায়ের ও দপ্তর সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মো. তৈয়ব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে মামুনুল হকের নির্দেশে ১৭ হেফাজত নেতার নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রসহ দা, ছোরা, কুড়াল, কিরিচ, হাতুড়ি, তলোয়ার, লাঠিসোটাসহ অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ হামলায় আরিফ-উজ-জামান গুরুতর আহত হন। এই ঘটনা ঘটানোর পেছনে হেফাজতের সঙ্গে ‘জামায়াত-শিবির-বিএনপি জঙ্গি’ কর্মীদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ