ঢাকা: দারিদ্রের মধ্যেই বেড়ে ওঠা। বাধার সম্মুখিনও হতে হয়েছে বার বার। তবুও মনে সব সময় লালন করেছে অধম্য ইচ্ছে শক্তি। আর সেই ইচ্ছে শক্তিতে ভর করেই আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে তার। বলতেছিলাম সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের অফিস সহকারী আশুতোষ নাথের কথা। তৃতীয় শ্রেনীর এই কর্মচারী এখন উচ্চতর গবেষণা করার জন্য বৃত্তি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।
আশুতোষ বেড়ে উঠেছেন খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে। বাবা মিলন নাথ ছোট ব্যবসায়ী। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট আশুতোষ দারিদ্রের মধ্যে দিয়েই বড় হয়েছেন। তবে স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়া। ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখেছেন বিজ্ঞানী হওয়ার। রসায়নে গবেষণা করার।
আশুতোষ নাথ মেধার স্বাক্ষর রেখে ২০০৮ সালে মানিকছড়ি রানী নীহার দেবী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ২০১০ সালে মানিকছড়ি গিরী মৈত্রী কলেজ থেকে এইচএসসি, ২০১৪ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চট্টগ্রাম হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে রসায়নে বিএসসি (অনার্স) পাশ করেন। এরপর ঢাকায় চলে আসেন। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরি নেন। চাকরির পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যেতে থাকেন।
২০১৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে রসায়নে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। আশুতোষ নাথের গবেষণার তিনটি আর্টিকেল আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
রসায়নে উচ্চতর গবেষণা স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে আশুতোষের। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস উচ্চতর গবেষণা করার বৃত্তি লাভ করেছেন। সেখানে মেডিসিন অ্যান্ড সিনথেটিক অরগানিক কেমিস্ট্রি বিষয়ের ওপর পিএইচডি করবেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে টিচিং অ্যাসিসটেন্স হিসেবে কাজ করবেন।
আমেরিকায় পিএইচডির সুযোগ পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আশুতোষ নাথ গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সবাই অত্যন্ত আনন্দিত। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল রসায়নে উচ্চতর গবেষণা করার। ঈশ্বরের কৃপায় সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। সবার কাছে আশীর্বাদ চাই।’
চলতি বছরের আগস্টে আশুতোষ তার স্ত্রী গান্ধী দেবীসহ পাড়ি জমাচ্ছেন আমেরিকায়। তার পিএইচডির বৃত্তি লাভের সংবাদে খুশি অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের সবাই।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, আশুতোষ নাথ অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে থেকে আইটি বিষয়ে দক্ষতা ও সততার সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার পিএইচডি বৃত্তি লাভের সংবাদে আমরা আনন্দিত। আমি তার বৃত্তি প্রাপ্তিতে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
সোনালীনিউজ/এমএইচ