ঢাকা : বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের দায় রয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ার পেছনেও দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক এই প্রভাব আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে।
বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকালে এক ওয়েবিনারে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে বাংলাদেশে প্রকৃতিতে যে ঋতু বৈচিত্র্য তা লোপ পাচ্ছে। এক ঋতুর সঙ্গে আরেক ঋতুর যে পার্থক্য তা মুছে যাচ্ছে। আর্দ্রতা কমে আসার পাশাপাশি তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ছে। এতে শহর এলাকায় ডেঙ্গুর মতো বাহকনির্ভর রোগের প্রকোপ বাড়ছে। ভবিষ্যতে রাজধানী শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গণ তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এই কারণেই ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে ঋতুভেদে আবহাওয়ার বৈচিত্র্য। তাই যখন শীত থাকার কথা তখন তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকছে। আবার আগের তুলনায় এখন গ্রীষ্মকালের সময় বাড়ছে। তাতে বাড়ছে গরমও। এমনিভাবে দীর্ঘ হচ্ছে বর্ষাকাল। তাতে রোগ-বালাই বেশি হচ্ছে। আর এইসবই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের পর থেকে প্রতি দশকে সারা বিশ্বে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্বিগুণ হচ্ছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বড় প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। ওই বছর সারাদেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল, তার অর্ধেকই ঢাকায় হয়েছিল। আর ঢাকায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার ছিল সারাদেশের ৭৭ শতাংশ। কারণ ২০১৯ সালে ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল। গত ৪৫ বছরে এমন বৃষ্টি আর হয়নি। পরেও অনেক বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে অনুকূল তাপমাত্রা আর আর্দ্রতা ডেঙ্গুর ব্যাপক বিস্তারে ভূমিকা রেখেছিল।
আবহাওয়ার এই বদলের কারণে বর্ষাকালে শহরগুলোতে যেমন বাহকনির্ভর রোগের প্রকোপ বাড়ছে তেমনি শুকনো মৌসুমে বাড়ছে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, যাতে মূল ভূমিকা রাখছে বায়ুদূষণ।
এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ মানুষ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত। আর ৬ শতাংশের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ