চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে নিহত ৩, আহত অর্ধশতাধিক

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১, ০৯:১৮ এএম
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা : চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন নিহত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সহিংসতায় ঠাকুরগাঁও, পটুয়াখালী ও সিলেটে তিনজন নিহতে পাশাপাশি  আহত হয়েছেন আরও ৫৩ জন। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ৭০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে বলে দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মিডিয়া সেন্টারে চতুর্থ ধাপের নির্বাচন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি খোঁজ নিয়েছি বিভিন্নভাবে। সব মিলিয়ে এ নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে, আনন্দমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে, জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল। তাই ভোটারদের উপস্থিতি আমরা ৭০ শতাংশের বেশি আশা করছি।

সিলেটে নিহত ১ : সিলেটের গোলাপগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে নিহত হন। রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের ফুলবাড়ি ইউনিয়নের বৈটিকর বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ এ ঘটনায় এক সাইকেল মেকানিকের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও এ সংঘর্ষে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

নিহত সাইকেল মেকানিকের নাম আবদুস সালাম (৪০)। তিনি লক্ষ্মীপাশা ইউপির রামপা দক্ষিণ ভাগ এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার রাতে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নে দুটি ভোটকেন্দ্রের উত্তেজনাকে কেন্দ্র করে বৈটিকর এলাকায় পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশসহ কয়েকজন এলাকাবাসী আহত হন। এ সময় আব্দুস সালাম নামের একজন আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তবে তিনি কীভাবে মারা গেছেন তা সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেনি।

নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিহতের ছেলে জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে আমার বাবা মৃত্যুবরণ করেছেন।’

এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গোলাম কবির বলেন, ‘একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তবে তিনি কার গুলিতে মারা গেছেন, সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

এ বিষয়ে জানতে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরীর মুঠোফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।

ঠাকুরগাঁওয়ে নিহত ১ : ঠাকুরগাঁওয়ে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে রাস্তা অবরোধ এবং এ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের গুলিতে হামিদুল ইসলাম (৬৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।

রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার রুহিয়া থানার রাজাগাঁও ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হামিদুল ইসলাম রাজাগাঁও ইউনিয়নের আসাননগর গ্রামের মৃত তছির উদ্দীনের ছেলে।

জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানার রাজাগাঁও ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আসাননগর কাদেরিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা ভোটকেন্দ্রের ফলাফলকে কেন্দ্র করে রাত ৮টার দিকে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি ছুড়লে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হন।

রুহিয়া থানার ওসি চিত্ত রঞ্জন বলেন, ঘটনাস্থলেই একজন মারা গেছেন। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। আহতরা ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রাঙ্গাবালীতে নিহত ১ : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নে গুলিবিদ্ধ হয়ে আবদুল খালেক (৪৫) নামে এক মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে চরমন্তাজ ইউনিয়নে নয়ার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ওই ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। তবে কার গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন সে বিষয়ে এখনো দায়িত্বশীল কোনও পক্ষের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, নিহত ব্যক্তি মেম্বার প্রার্থী জিয়ার সমর্থক। নির্বাচন পরবর্তী ভোট গণনা নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক মেম্বার প্রার্থীর কর্মীসমর্থকদের মধ্যে বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটে।

রাঙ্গাবালী থানার ওসি জগলুল বলেন, আমি এখনও কিছু বলতে পারছি না। চরমোন্তাজ পৌঁছানোর পর বিস্তারিত জানাতে পারব।

এ বিষয় জানতে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ