ঢাকা : জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সব ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ, অন্য ক্যাডারের চতুর্থ থেকে তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের পদোন্নতি প্রদানসহ প্রজাতন্ত্রের সব দফতর/সংস্থার প্রত্যেক স্তরের কর্মচারীগণের পদ সৃষ্টি, বিলুপ্তি, সংরক্ষণ আদেশ প্রদান করে। এ কারণে প্রজাতন্ত্রের সব মানবসম্পদের জন্য সুষ্ঠু ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেছেন। মন্ত্রণালয়ের সিপিটি অনুবিভাগ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সভায় সভাপতিত্ব করেন।
গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (জিইএমএস) সফটওয়্যার তৈরির একটি ধারণাপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এই ধারণাপত্র অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সব দফতর/সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামো এবং জনবল একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা করা হবে। বিভিন্ন মডিউলে বিভক্ত প্রস্তাবিত সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে সব ক্যাডারের নবম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য একটি তথ্যবহুল এবং ডাইনামিক পিএমআইএস চালু করা হবে। বর্তমান বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন প্রদানপদ্ধতি প্রতিস্থাপন করে অ্যানুয়্যাল পারফরম্যান্স অ্যাপরাইসাল রিপোর্ট (এপিএআর) ও অ্যানুয়্যাল কনফিডেনশিয়াল রিপোর্ট (এসিআর) সমন্বয়িত পদ্ধতি পরিবর্তন এবং পিএমআইএস সফটওয়্যার এ সংরক্ষিত তথ্য ব্যবহার/মূল্যায়ন করে অনলাইন/ই সিস্টেমে কর্মকর্তাদের বদলি/পদায়ন ও অন্যান্য কার্যক্রম গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া প্রজাতন্ত্রের সব দফতর/সংস্থার সাংগঠনিক কাঠামো সফটওয়্যারের আওতায় এসে মনিটরিং ও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
সভায় বলা হয়, বর্তমানে কর্মরত সব কর্মকর্তার সাম্প্রতিক ছবি, মোবাইল, ই-মেইল সংগ্রহপূর্বক পিডিএস হালনাগাদ কার্যক্রম চলমান আছে। যুগ্মসচিব পর্যায়ের দু’জন, উপসচিব পর্যায়ের ১১ জন, সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যায়ের ১৮০ জন, সহকারী সচিব পর্যায়ের ৭৪ জনের ছবি পাওয়া যায়নি। যাদের ছবি পাওয়া যায়নি তাদের ছবি সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে। সভায় সব কর্মকর্তার রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য তথ্যাদি হালনাগাদ সম্পন্ন করতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার আয়োজন করা সিদ্ধান্ত হয়।
অন্যান্য ক্যাডার থেকে আগত উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের তথ্যাদি গোপনীয় হওয়ায় তা এপিডি অনুবিভাগ সংরক্ষণ করে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের তথ্য পাওয়া গেলে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। কর্মকর্তাদের পিডিএস এনআইডি সংযুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাই থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ক্যাডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ও তদন্ত অনুবিভাগে সরাসরি ২৫২টি, অনলাইনে ৭৩টিসহ মোট ৩২৫টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই পাঁচ মাসে ১৬টি বিভাগীয় মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগে দায়ের হওয়াসহ ৬৫টি বিভাগীয় মামলার মধ্যে একজন কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড, ২১ জন কর্মকর্তাকে লঘুদণ্ড এবং ৯ জন কর্মকর্তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বর্তমানে ৪৩টি বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে।
সভায় জানানো হয়, সর্বস্তরে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য বিভাগীয় মামলার নিয়মতান্ত্রিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রমাণিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। এসব মামলা দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দেয়া হয় সভায়। প্রয়োজনে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের তাগিদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ