ঢাকা : সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ২৩ বিশিষ্টজন। তাঁরা বলেছেন, নতুন করে ভোজ্যতেল বিশেষত সাধারণ মানুষ যে তেল ব্যবহার করেন, সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কষ্টকর করে তুলবে।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তাঁরা ভোজ্যতেলসহ খাদ্যসামগ্রীর মূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত রোববার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয়। তাতে বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম হবে ১৬৮ টাকা। আর বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম হবে ৭৯৫ টাকা। এত দিন ছিল ৭৬০ টাকা। ২০২০ সালের অক্টোবরে ৫ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৫০৫ থেকে ৫১৫ টাকা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রায় দুই বছর যাবৎ করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সীমাহীন আর্থিক দুরবস্থায় নিমজ্জিত। করোনাকালে বিপুলসংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে অনেকের। এ রকম পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, বিশেষ করে খাদ্যসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। নতুন করে ভোজ্যতেল বিশেষত সাধারণ মানুষ যে তেল ব্যবহার করে, সয়াবিন ও পাম অয়েলের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কষ্টকর করে তুলবে।’
বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘পরিসংখ্যান বলছে, করোনা মহামারিকালে বিপুল জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পেলেও কোটিপটির সংখ্যা বেড়েছে। ফলে রাষ্ট্র-সমাজ সর্বত্র বৈষম্য ও সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষণীয়। সা¤প্রতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সহিংসতায় শতাধিক প্রাণাহানির ঘটনা এই সংকটের বহিঃপ্রকাশ।’
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বাজারব্যবস্থায় একটি দুষ্টচক্র তথা সিন্ডিকেটের প্রভাব দেখা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। বলা হয়, ‘এই সিন্ডিকেট বিভিন্ন সময়ে মজুত, কৃত্রিম সংকট তৈরি ও বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে মূল্য বৃদ্ধি করে সাধারণ ভোক্তার কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠলেও এদের বিরুদ্ধে কখনোই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারি সংস্থাগুলো আবারও বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।’ ভোজ্যতেলের দাম নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, রামেন্দু মজুমদার, ডা. সারওয়ার আলী, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, ডা. রশিদ-ই-মাহাবুব, খুশী কবির, অধ্যাপক এম এম আকাশ, রোবায়েত ফেরদৌস, সেলু বাসিত, ডা. লেনিন চৌধুরী, জাহিদুল বারী, মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিম রেজা, সালেহ আহমেদ, পারভেজ হাসেম, লতিফুল বারী হামিম, আব্দুর রাজ্জাক, এ কে আজাদ, অলক দাস গুপ্ত ও দীপায়ন খীসা।
সোনালীনিউজ/এসআই/এমএএইচ