ঢাকা: মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের পদবি পরিবর্তনে চূড়ান্ত সম্মতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সোমবার (২১ মার্চ) জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের উপসচিব আহমেদ কামরুল হাসানের সাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রনায়য়ের অর্থবিভাগ।
প্রজ্ঞাপনে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসের কার্যালয়ের কর্মচারিদের বিভিন্ন পদের পদনাম পরিবর্তন করা হয়। তবে দুঃসংবাদ হলো পদনাম পরিবর্তিত হলেও বেতন গ্রেড পরিবর্তন করা যাবে না।
প্রজ্ঞাপন অনুযাীয়অফিস সুপারিনটেনমেন্ট, সিএকাম উচ্চমান সহকারী ও সাঁটলিপি কাম কম্পিউটার অপারেটরের পরিবর্তিত পদের নাম হবে ‘উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা’। বেতন গ্রেড-১৩।
অপরদিকে, প্রধান সহকারী, ট্রেজারি হিসাব রক্ষক, সাঁটলিপি কাম কম্পিউটার অপারেটর, ও পরিসংখ্যান সহকারির পরিবর্তিত পদের নাম হবে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা। বেতন গ্রেড-১৪।
উচ্চমান সহকারীর পরিবর্তিত পদের নাম হবে উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা। বেতন গ্রেড-১৫।
প্রজ্ঞাপনে ৬টি শর্তও উল্লেখ করা হয়েছে।
১. পদনাম পরিবর্তিত হলেও বেতন গ্রেড পরিবর্তন করা যাবে না।
২. বিদ্যমান নিয়োগ বিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী জানয়ন করতে হবে।
৩. প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
৪. পদনাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর সদয় অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।
৫. পরিবর্তিত পদসমূহের পদসংখ্যা বিদ্যমান পদসমূহের মোট পদসংখ্যার সমান হবে অর্থাৎ মোট পদসংখ্যার কোন হ্রাসবৃদ্ধি ঘটবে না।
৬. সকল আনুষ্ঠানিকতার পর পদবী পরিবর্তনের ০৪ (চার) কপি জিও জারি করে পৃষ্ঠাংকনের জন্য অর্ধ বিভাগে প্রেরণ করতে হবে।
জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর এক বছরের বেশি সময় পার হলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে ছিল মাঠ প্রশাসনের সংস্কার। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মচারী সমিতি (বাবিককাকস) ও বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস)। তবে জনপ্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মসূচি স্থগিত রেখে তারা মার্চের ১ তারিখ থেকে শুরু করেছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার সংশোধীত প্রস্তাব প্রেরণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমকে চিঠি পাঠান। জনপ্রশাসন সচিব সেই চিঠি মন্ত্রণালয়ের সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগে (সওব্য) পাঠিয়েছেন। সওব্য অনুবিভাগ কর্মচারীদের বেতন গ্রেড অপরিবর্তিত রেখে পদের নাম তিনভাবে বিভক্ত করে বিধি অনুবিভাগে পাঠিয়েছে। বিধির মতামত শেষে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে চলতি মাসের মধ্যে পদ নাম পরিবর্তনের প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
বহুল প্রচলিত ‘সরকারি কর্মচারী আইন’ বইয়ের লেখক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ফিরোজ মিয়া বলেন, নাম পরিবর্তন করলে তাদের সমাজে মর্যাদা বাড়বে। কিন্তু আর্থিক কোনো সুবিধা হবে না। তবে তিন গ্রেড একসঙ্গে করে পদোন্নতি দিলে অসুবিধার কিছুই নেই। এক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে পদগুলো সমন্বয় করতে হবে। অন্য দপ্তরে সমান পদের প্রায় ৩০ ধরনের কর্মচারীর পদবি ও গ্রেড উন্নীত হলেও মাঠ প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কর্মচারীদের পদোন্নতি হয়নি। গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি অফিসের কর্মচারীদেরও পদোন্নতি বিষয়ক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাদের বেতন গ্রেড ১৬ ও ১৭তম থেকে ১১ ও ১২ তম গ্রেড করে আদেশ জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়।
সোনালীনিউজ/এন