ঢাকা : জাতীয় বেতন ও ভাতাদি আদেশ জারি করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। ১৯৭৩ সালের প্রথম পে-স্কেল হতে চলতি পে-স্কেল ২০১৫ পর্যন্ত পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ৫ বছর অন্তর অন্তর পূর্বের পে-স্কেলগুলো জারি হয়েছে।
পে-স্কেল কেন জারি করার সময় হয়েছে?
করোনাকাল অতিবাহিত হওয়ারপর বিশ্ব বাজার মন্দা হয়েছে। দেশের বাজারে পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে। তাছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি-রপ্তানিতে বিশ্ব বাজারসহ আমাদের দেশেও ভাটা পড়েছে। চলতি অর্থ বছরেও দেশের বাজারে মূল্যস্ফিতি ৬.১৮ ছাড়িয়েছে। প্রতিবছর ৫% হারে সরকারি কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়। সে হিসাবে দেখা যাবে যে, প্রতি বছর যে হারে মূল্যস্ফিতি বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায় সেই হারে বেতন বৃদ্ধি হয় না। তাই দ্রব্য মূল্যের সাথে বেতনভাতাদি এখন সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই পে-স্কেল জারি হওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
এ বছর কি পে-স্কেল জারি হবে?
সোজা সাপটা উত্তর হচ্ছে এ বছর আর পে-স্কেল জারি হবে না। শুধু তাই নয়, বাজেট পেশ শেষ যেখানে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার বাজেট পর্যন্ত রাখা হয়নি। তাই এ বছর মহার্ঘ ভাতাও পাওয়া যাবে না। দ্রব্যমূল্যের গতির সাথে বেতন ভাতাদি যদিও পেরে উঠছে না তবুও সরকারি কর্মচারিদের এ বছর আর মহার্ঘ ভাতা আশা করা যায় না।
তবে যে হারে দ্রব্যমূল্য বেড়ে চলেছে গামেন্টস শ্রমিকদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি ঘোষণা আসলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন ভাতার উপর একটি মহার্ঘ ভাতা বা অন্য কোন সুযোগ সুবিধার ঘোষণা আসতে পারে সেটি পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। এখনও পর্যন্ত সরকার ব্যয় সংকোচন করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নতুন পে স্কেল কবে হবে?
নতুন পে-স্কেল ২০২২ আপতদৃষ্টিতে হবে না মনে হচ্ছে। সরকারের আলোচনা ও দৃষ্টি ভঙ্গি এমনটিই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাই নতুন পে-স্কেল ২০২২ না বলে ২০২৩ বলাই উত্তম। ১৯৭৩ সাল হতে পে-স্কেল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ২০২০ সালেই পে-স্কেল ঘোষণা করা উচিৎ ছিল; কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয়াদি বিবেচনা করে পে-স্কেল দেয়া হয়নি। বর্তমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম কোনভাবে টেনে ধরা যাচ্ছে না। তাই এ বছর প্রয়োজন হলেও সরকারি দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন পে-স্কেল জারি করবে না এই বোঝা যাচ্ছে।
সরকারি কর্মচারীগণ জাতীয় পে-স্কেল মোতাবেক বার্ষিক প্রায় ৫% হারে ইনক্রিমেন্ট পেয়ে থাকে। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ বেতন বৃদ্ধির ধাপগুলো সেভাবে সাজানো হয়েছে। মোট কথা বাজারে মূল্যস্ফিতির সাথে বেতন বৃদ্ধির সমন্বয় হচ্ছে না। গত ৬ বছরে ৩০% বেতন বৃদ্ধি হলেও মূল্যস্ফিতি বা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৭-৪০%। এমতাবস্থায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির ফলে নতুন পে কমিশন গঠনের মাধ্যমে ৯ম পে-স্কেল ঘোষণাসহ অন্যান্য বৈষম্য দূর করার পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই