ঢাকা : পদ্মা সেতু চালুর পর এবার বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের অপেক্ষা। সময় নির্ধারণ না হলেও আগামী ডিসেম্বরে পুরো কাজ শেষ করতে চায় টানেল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে বাকি রয়েছে প্রকল্পের ১৪ শতাংশ কাজ। তবে বর্তমান কাজের যে অগ্রগতি, এতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ইতোমধ্যে ৮৬ শতাংশ কাজসম্পন্ন হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেল প্রকল্পের। পাশাপাশি টানেলের উভয়প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোডের কাজের অগ্রগতি ৮৫ শতাংশ। এছাড়া টানেলের অভ্যন্তরে কমিউনিকেশন সিস্টেমসহ ভেন্টিলেশন ও অন্যান্য কাজের ৮ শতাধিক সরঞ্জাম আনা হচ্ছে চীনের সাংহাই থেকে। করোনার কারণে টানেলের বেশ কিছু সরঞ্জাম চীনে আটকে পড়ায় কিছুটা পিছিয়ে পড়ে কাজের অগ্রগতি। যদিও অন্যান্য কাজ এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, এ প্রকল্পে দুটি টিউবের খননকাজ শেষ হলেও বর্তমানে দুই টিউবের সঙ্গে ৬-৭ মিটার পর পর তিনটি ক্রস প্যাসেজের কাজ চলছে। যা শুধু চ্যালেঞ্জিং নয়, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণও। নির্মাণাধীন টানেলে বর্তমানে এ উচ্চ ঝুঁকির তিনটি ক্রস প্যাসেজের মধ্যে একটির কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অপর দুটির কাজও চলছে সমানতালে।
প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, প্রথম টিউবে পেভমেন্ট (রোড সার্ফেজ) স্থাপন কাজ এগিয়ে চলেছে। এটি শেষ হলে দ্বিতীয় টিউবে পেভমেন্ট স্থাপন করা শুরু করা হবে। এছাড়া প্রথম টিউবে লেনস্ল্যাব স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্বিতীয় টিউবেও লেনস্ল্যাব বসানোর কাজ ৮০ শতাংশ শেষ।
১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ আরো ৬ মাস বাড়াতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত আরো ৬ মাস সময় দীর্ঘায়িত হলে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় হবে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত। যদিও ডিসেম্বরেই কাজ শেষ হতে পারে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
দুই টিউব সংবলিত মূল টানেল হবে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘের। এর মধ্যে টানেল টিউবের দৈর্ঘ ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন। এরপর ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের কাজ উদ্বোধন করেন।
চীনের এক্সিম ব্যাংক ২ শতাংশ হার সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে এ প্রকল্পে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকার জোগান দিচ্ছে ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। এ টানেল নির্মাণকাজ শেষ হলে এটিই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে কোনো নদীর তলদেশে নির্মিত প্রথম সুড়ঙ্গ পথ।
সোনালীনিউজ/এমটিআই