ঢাকা: কথায় আছে প্রেম মানে না কোন বয়স, কোন নিয়ম। সমাজ যতই বাঁকা চোখে তাকাক, যতই কটূ কথা শোনাক না কেন প্রেমের ক্ষেত্রে বয়স কিন্তু কোনও বাধা মানে না। তাইতো প্রেম, ভালোবাসা অন্ধ করে দেয় মানুষকে। হয়তো নাটারের কলেজছাত্র ও কলেজ শিক্ষিকার ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছিল। তবে তাদের ভালোবাসার যে এত দ্রুত পরিসমাপ্তি ঘটবে এমনটা কেউ ভাবেনি।
আরও পড়ুন : সেই শিক্ষিকার মৃত্যু নিয়ে যা বললেন পুলিশ সুপার
ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয়। এরপর একে অপরের প্রেমে পড়ে যান তারা। এক পর্যায়ে ভালোবাসা থেকে কাজী অফিসে গিয়ে দুজন গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের ৬ মাস পর বিষয়টি জানাজানি হয়। বলছিলাম কলেজছাত্র মামুন হোসেন (২২) ও নাটোরের খুবজীপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক খায়রুন নাহার দম্পতির কথা।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে বিয়ে করা সেই কলেজ শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার, স্বামী আটক
বিয়ের বিষয় জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তাদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তখনই মামুন জোরালোভাবে বলেছিলেন- “ভালোবাসার কোনো বয়স নেই, মন্তব্য কখনো গন্তব্যে পৌঁছাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।” তার এমন বক্তব্যও সারাদেশে ভাইরাল হয়।
আরও পড়ুন : নতুন করে বাঁচতে শেখার সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করল কে?
জীবনের শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত একসঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করা আলোচিত এই ছাত্র-শিক্ষিকা দম্পতির বিয়ের মাত্র আট মাসের মাথায় মৃত্যুর মাধ্যমে প্রেমের পরিসমাপ্তি ঘটলো।
রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকার ভাড়াবাসা থেকে শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পৌর এলাকার মো.খয়ের উদ্দিনের মেয়ে এবং উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।
আরও পড়ুন : ছাত্রকে বিয়ে করা সেই শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার
ভবনের বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, রোববার ভোরে মামুন ভবনের অন্য বাসিন্দাদের জানান- তার স্ত্রী খায়রুন নাহার শেষ রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। লোকজন তার বাসায় গিয়ে খায়রুন নাহারের মরদেহ মেঝেতে শোয়া অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। তারা মামুনকে বাসার মধ্যে আটকে পুলিশে খবর দেয়।
এ ঘটনায় ইতিমধ্যে কলেজছাত্র মামুনকে আটক করেছে পুলিশ।
নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাছিম আহমেদ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। সংশ্লিষ্ট অন্য বাহিনীর সদস্যরাও তদন্ত করবে। তদন্ত ও মরদেহের ময়নাতদন্ত হলে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে হত্যা আর আত্মহত্যা যাই হোক না কেন এমনটা কেনো ঘটলো তা পুলিশ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে।
এর আগে শিক্ষিকা মোছা. খায়রুন নাহার জানিয়েছিলেন, আগের স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। দিনের পর দিন তিনি ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে থাকতেন। এর মধ্যেই ফেসবুকে তার সঙ্গে কলেজছাত্র মামুনের পরিচয় হয়। মামুনের সঙ্গে কথা বলে তিনি শান্তি অনুভব করেন। পরে গত বছরের ১২ ডিসেম্বরে কাউকে না জানিয়ে গোপনে বিয়ে করায় ছেলের পরিবার মেনে নিলেও মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই নাটোর শহরে তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
সোনালীনিউজ/এম