ঢাকা : রিভা শাহরিয়ার (পরিচিত নম্বর ২০২৮৯) নামে একজন উপসচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ‘অসদাচরণ ও পলায়নের’ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়েই তাকে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে অবসর দেওয়া হয়।
গত ১৪ আগস্ট এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কেএম আলী আজম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানা গেছে, রিভা শাহরিয়ার যুক্তরাজ্যে ছুটি ভোগরত অবস্থায় তার আবেদনের ভিত্তিতে বিশেষ বিবেচনায় তার অনুকূলে সন্তানের চিকিৎসার জন্য পূর্বে অনুমোদিত ছুটির ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১০ জুন থেকে একই বছরের ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস বিনা বেতনে অসাধারণ ছুটি (বহির্বাংলাদেশ) মঞ্জুর করা হয়। ওই ছুটি শেষে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগদান করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি ছুটি শেষে যোগদান না করেই কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্যপূর্বক লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে পুনরায় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছর বিনা বেতনে অসাধারণ ছুটির আবেদন করেন। আগের মঞ্জুরকৃত ছুটির শর্ত লঙ্ঘন করে তিনি পুনরায় ছুটির আবেদন করায় তার আবেদন না- মঞ্জুর করে তাকে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়। কিন্তু তিনি কাজে যোগ দেননি।
বিনা অনুমতিতে বিদেশে অবস্থান করার কারণে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) ও ৩(গ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ ও পলায়ন’-র অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব সাইফ উদ্দিন আহমেদকে। গত ৬ ফেব্রুয়ারিতে বিভাগীয় মামলার ব্যক্তিগত শুনানিতেও উপস্থিত হতে পারেননি উপসচিব রিভা।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা রিভা শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল মতামত দেন তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদন ও অভিযোগের গুরুত্বসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে গুরুদণ্ড হিসেবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গত ১৯ মে তাকে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। তার দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব পর্যালোচনা করে তাকে গুরুদ- হিসেবে চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। কমিশন উপসচিব রিভাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিতে মত দেয়। সরকারি কর্ম কমিশনের মত এবং রাষ্ট্রপতির সদয় সম্মতির ভিত্তিতে তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ