ঢাকা: রেল ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে। ছয়মাসের (জানুয়ারি-জুন) জন্য ভারতের নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেড(এনআরএল) থেকে এই পরিমান ডিজেল আমদানিতে খরচ হবে ৫৪৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন(বিপিসি) জন্য ডিজেল আমদানির এই প্রস্তাবটি বুধবার (১১ জানুয়ারি) অনুষ্ঠেয় ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এনআরএল-এর শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশীপ পাইপলাইন (আইবিপিএল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেল আমদানির বিষয়ে ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল বিপিসি ও এনআরএল এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই করা হয়। পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে বিপিসি ও এনআরএল-এর মধ্যে ১৫ বছরের জন্য ফিক্সড প্রিমিয়াম (৫.৫০/বিবিএল)-এ সেলস অ্যান্ড পারচেজ বিবেচনা করে পাইপলাইন নির্মাণের আগে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে এনআরএল থেকে রেল ওয়াগানের মাধ্যমে ২০১৬ সাল থেকে ডিজেল আমদানি করা হচ্ছে। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর তারিখে পাইপলাইন প্রকল্পের পাইপলাইন স্থাপন কাজের উদ্বোধন করা হয়।
সূত্র জানায়, এনআরএল ২০২৩ সালের জন্য রেল ওয়াগনে ডিজেল সরবরাহ চলমান রাখার বিষয়ে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বালানি তেল চট্রগ্রামস্থ প্রধান স্থাপনায় সংরক্ষণের পর খুলনার দৌলতপুর ডিপো হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর ডিপো পাঠাতে হয়। ফলে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি ও অপারেশন লস (ট্রানজিট লস) বেশি হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে এনআরএল থেকে পার্বতীপুরে ডিজেল গ্রহণ করা হলে স্বল্প সময়ের মধ্যে ডিজেল প্রাপ্তি নিশ্চিত ও পরিবহন খরচ সাশ্রয় করা সম্ভব হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়াগন স্বল্পতার কারণে চট্রগ্রামের প্রধান স্থাপনা থেকে দৌলতপুর এবং দৌলতপুর ডিপো থেকে পার্বতীপুর ডিপো তথা উত্তরাঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু এনআরএল থেকে আমদানি করা ডিজেল দিয়ে পার্বতীপুর ডিপো/উত্তরাঞ্চলের চাহিদা পূরণসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ডিজেল সরবরাহে পরিবহন খরচ ও অপারেশন লস গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এ সম্পর্কিত এক কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আগের ধারাবাহিকতায় বিপিসি’র আমন্ত্রণে বিপিসি ও এনআরএল-এর মধ্যে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর ভার্চুয়াল নেগোশিয়েশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নির্ধারিত প্রিমিয়াম ৫.৫০ ডলার/ব্যারেল হিসেবে ২০২৩ পঞ্জিকাবর্ষে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে এনআরএল ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল সরবরাহে এনআরএল সম্মত হয়। এছাড়া আইবিএফপিএল পাইপলাইন চালু হলে পাইপলাইনের মাধ্যমে ৯০ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেল সরবরাহে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এনআরএল ।
২০২৩ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ের জন্য ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানিতে প্রিমিয়াম, রেফারেন্স মূল্য ও ইন্স্যুরেন্সসহ সর্বমোট আনুমানিক ৫১.০১ মিলিয়ন ডলার হিসেবে বাংলাদেশী মুদ্রায় ৫৪৫ কোটি ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। বিপিসি’র প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব বাজেট, জ্বালানি তেল বিক্রিলব্ধ অর্থ এবং অন্যান্য উৎস থেকে ঋণ নেয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত জ্বালানি তেল আমদানির অর্থায়ন করা হবে বলে সূত্র জানায়।
সোনালীনিউজ/এসআই/আইএ