ঢাকা: পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। নতুন দর আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। নতুন দর অনুযায়ী এবার পাইকারিতে ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ, আর খুচরায় ৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে।
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, গ্রাহক পর্যায়ে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীর জন্য আগের চেয়ে ইউনিটপ্রতি ২০ পয়সা মূল্য বেড়েছে। গ্রাহক পর্যায়ে এই দাম ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪ টাকা ১৪ পয়সা করা হয়েছে। এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য ৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা ১০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে গৃহস্থালির খুচরা বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৫০ ইউনিট পর্যন্ত ৩ টাকা ৯৪ পয়সা থেকে ৪ টাকা ১৪ পয়সা করা হয়েছে। সাধারণ গ্রাহকের ক্ষেত্রে ৪ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪টাকা ৬২ পয়সা করা হয়েছে। ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত ৬ টাকা ১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ৩১ পয়সা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত ৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা করা হয়েছে।
এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত ৬ টাকা ৩৪ পয়সা থেকে ৬ টাকা ৯৯ পয়সা, ৪০১ থেকে ৬০০ পর্যন্ত ইউনিট ১০ টাকা ৪৪ পয়সা থেকে ২০ টাকা ৯৬ পয়সা এবং ষষ্ঠ ধাপে ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ১২ টাকা ৩ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৩৬ পয়সা করা হয়েছে।
সেচ বা কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাম্পের ক্ষেত্রে আগে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল চার টাকা ৩৭ পয়সা। এখন সেটি বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ৫৯ পয়সা।
ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে এখন ফ্ল্যাট রেট ৯ টাকা ৪১ পয়সা, অফ পিকে ৮ টাকা ৪৬ পয়সা এবং পিকে ১১ টাকা ২৯ পয়সা। আগে যা ছিল যথাক্রমে ৮ টাকা ৯৬ পয়সা, ৮ টাকা ৬ পয়সা এবং ১০ টাকা ৭৫ পয়সা।
নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকা ৬০ পয়সার স্থলে এখন ১৩ টাকা ২৩ পয়সা গুণতে হবে। শিক্ষা, ধর্মীয় ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতালের ক্ষেত্রে ইউনিটপ্রতি নতুন দাম ৬ টাকা ৬৪ পয়সা। আগে যা ছিল ৬ টাকা ৩২ পয়সা। রাস্তার বাতি ও পানির পাম্পের ক্ষেত্রে ইউনিট প্রতি বিদ্যুৎ খরচ ৮ টাকা ৯ পয়সার পরিবর্তে ৮ টাকা ৪৯ পয়সা হলো।
ব্যাটারি চার্জিং স্টেশনের ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের নতুর দাম ফ্ল্যাট ৮ টাকা ৪২ পয়সা, অফ পিকে ৭ টাকা ৫৮ পয়সা, সুপার অফ পিকে ৬ টাকা ৭৪ পয়সা এবং পিকে ১০ টাকা ৫৩ পয়সা।
এছাড়া ‘বাণিজ্যিক ও অফিস’শ্রেণিতে ইউনিট প্রতি ফ্ল্যাট রেট ১০ টাকা ৮২ পয়সার পরিবর্তে ১১ টাকা ৩৬ পয়সা, অফ পিকে ৯ টাকা ৭৩ পয়সার পরিবর্তে ১০ টাকা ২২ পয়সা ও পিক সময়ে ১২ টাকা ৯৮ পয়সার পরিবর্তে ১৩ টাকা ৬৩ পয়সা দিতে হবে।
গত নভেম্বরে পাইকারি পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি। এটি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়।
এরপর ডিসেম্বর থেকেই খুচরা দাম বাড়াতে বিইআরসির কাছে আবেদন করে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা। ৮ জানুয়ারি এসব আবেদন নিয়ে শুনানি করে বিইআরসি। এরপর ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে প্রতি ইউনিটে গড়ে ৫ শতাংশ দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল, যা ওই মাসের বিল থেকেই কার্যকর করা হয়েছিল।
আবার দাম বাড়ানো নিয়ে গতকাল বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছিলেন, ‘প্রত্যেক মাসেই গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করার কথা আমরা আগেই বলেছিলাম। আগামী মাসে বিদ্যুতের দাম আরেকবার সমন্বয় করতে হবে। আমাদের আর ভর্তুকি দেওয়ার সুযোগ নেই। এখন এভাবে সমন্বয়ের মধ্য দিয়েই যেতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন নতুন করে পাইকারি ও গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা এলো।
দাম বাড়ানোর ক্ষমতা নিজেদের হাতে নিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন সংশোধন করে গত ১ ডিসেম্বর অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এরপর জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো সরকার ওই ক্ষমতার প্রয়োগ করে।
সোনালীনিউজ/এম