ঢাকা: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এস তাহের আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন। ফলে তাদের ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (২৬ জুন) বঙ্গভবন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরবে থাকা রাষ্ট্রপতি সফরে যাওয়ার আগেই এই আবেদন নাকচ করে দেন।
দুই আসামির আবেদন নাকচ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে রাজশাহী কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় রয়েছেন দুই আসামি।
গত ১৫ মে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন এবং ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর।
এর আগে গত মাসে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বেঞ্চ স্বাক্ষরের পর চাঞ্চল্যকর এই মামলার ২১ পাতার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
এই মামলায় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছিল পুলিশ। মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২২ মে চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দুজনকে খালাস দেন রাজশাহীর দ্রুত বিচার আদালত।
[202044]
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, নিহত অধ্যাপক ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর বড় ভাই আব্দুস সালাম।
তবে বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিরা আপিল করেন। পরে শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল মামলার দুই আসামি মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রেখে অপর দুই আসামির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। পাশাপাশি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামির দণ্ড বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরবর্তী সময়ে শুনানি শেষে গত বছরের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। এরপর আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। সবশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রিভিউর ওপর শুনানি শুরু হয়। বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ফাঁসির দণ্ড থেকে বাঁচার সব চেষ্টা শেষে দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান। এখন সেটাও নাকচ হয়ে যাওয়ায় তাদের ফাঁসি কার্যকর সময়ের অপেক্ষা মাত্র বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সোনালীনিউজ/এম