ঈদ উপলক্ষে সরকার চার দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। তাই রাজধানীর মানুষ ঈদ উদযাপনে গেছেন গ্রামে পরিবারের কাছে। আর এই কারণে কার্যত শূণ্য হয়ে পরেছে রাজধানী। সড়কে যানচলাচল কম, সঙ্গে যাত্রীর সংখ্যাও কম। আর বৃষ্টির কারনে চলাচলে কিছু সমস্যাও হচ্ছে। এইদুই কারণে মূলতে রাজধানীর সড়ক ফাঁকা।
সকাল থেকে রাজধানী ঢাকার রাস্তা এখন ফাঁকা। সড়কগুলোতে নেই জটলা, নেই গাড়ির হর্ন। যেন এক নীরব শহরে নগরবাসীর প্রশান্তি।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। সড়কে বেশি যানবাহন না থাকলেও রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশা মিলছে প্রয়োজন মতোই। রাস্তায় দুই-একটি বাস থাকলেও যাত্রী পেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
রাজধানীর কমলাপুর, সদা ব্যস্ত এ এলাকার সড়কে গতকাল পর্যন্ত ছিল হাটে আসা ক্রেতা এবং ঘরমুখো মানুষের চলাচল। তবে আজ ভোর হতেই পাল্টে গেছে দৃশ্য। এখন আর নেই পশুর হাটের ব্যাপারিদের হাঁকডাক, নেই ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরার তাড়া। কয়েকটি রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা আর প্রাইভেটকার ছাড়া এই সড়কে দেখা যায়নি তেমন কোনো যানবাহন।
একই অবস্থা দেখা গেছে ধোলাইপাড়, শনির আখড়া, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান, পল্টন, শাহবাগ, কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। মানুষের যাতায়াত কম হওয়ায় এসব সড়ক অনেকটা ফাঁকা। তবে বেলা বাড়লে মানুষের যাতায়াত কিছুটা বাড়তে পারে। এসব এলাকায় গাড়ির চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক কম। নগরজুড়ে চলছে ছুটির আমেজ।
রিকশাচালক আলী জানান, ঈদে রাস্তা ফাঁকা থাকে, ভাবলাম যেহেতু কোরবানি দিতে পারি না একটু গাড়ি নিয়ে নামি। সকালে একটা ট্রিপ দিয়েছি। ঈদের নামাজে বায়তুল মোকাররমে যাত্রী নিয়ে গিয়েছি। পরে আবার আরেক যাত্রী নিয়ে ধোলাইপাড় আসলাম। এখন তো যাত্রী দেখছি না। ভাড়া কম হলেও যানজট না থাকায় তেমন সমস্যা হয় না। তবে মানুষের মাংস কাটা শেষ হলে আবার ভিড় বাড়বে, অনেকে দূরে আত্মীয়-স্বজনদের মাংস দিতে যায়।
সিএনজি চালক রশিদ মিয়া জানান, সকাল থেকে যাত্রী নেই। বিভিন্ন সড়ক ঘুড়েও যাত্রী পাইনি। তবে দুপুরের পরে আশা করি যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। তখন আমরা আর বসে থাকতে পারবো না। গরু কোরবানির পর গোস্ত বিভিন্ন দিকে দেয়ার জন্য হলেও অনেকে বের হবে। আর পরিবার নিয়ে অনেকেই বের হবে যদি বৃষ্টি না হয়।
ফাঁকা শহরে যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সেজন্য মোড়ে মোড়ে পুলিশ রয়েছে। প্রতিটি থানায় রয়েছে পুলিশি টহল দল। এছাড়া রাজধানীর প্রতি এলাকাতেই গোয়েন্দারা কাজ করছে। এর পাশাপাশি র্যাবের টহল দলও রাজধানী জুড়ে টহল দিচ্ছে। তাদের ব্যাটালিয়ন অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চলছে টহল ব্যবস্থা।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সোনালীনিউজকে বলেন, সড়ক মূলত এই সময়টাতে ফাঁকাই থাকে। তাই কোনো ধরনের ছিনতাই বা দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের সদস্যরা কাজ করছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের প্রধান উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন সোনালীনিউজকে বলেন, ট্রাফিক সদস্যরা সড়কে রয়েছে। সকালের দিকে কিছুটা যানবাহন কম থাকলেও বিকেলে কিছুটা বড়বে। এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে ট্রাফিক বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া রাজধানী জুড়ে বিভিন্ন থানার পেট্রোল টিম কাজ করছে। আশা করি এবারের ঈদ আমরা কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই পার করতে পারবে।
সোনালীনিউজ/এসআই