ঢাকা: মানবপাচার বাংলাদেশ সহ্য করবে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা প্রত্যেকটি ভুক্তভোগীর কাছে পৌঁছাব এবং সব মানবপাচারকারীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
বুধবার (২ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেল বিশ্ব মানবপাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন মন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবপাচার গুরুতর একটি অপরাধ। এটা প্রতিরোধে সরকার কাজ করছে। প্রতিটি মানব পাচার ঘটনার তদন্ত ও বিচার করতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এই অপরাধকে আমরা কোনো ভাবেই সহ্য করব না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে মানবপাচার বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্তরে আছে। মানবপাচার প্রতিরোধে এটি বাংলাদেশের প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টার প্রতিফলন। মানবপাচার প্রতিরোধে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ডেডিকেটেড সেল,ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট এবং সাতটি মানবপাচার প্রতিরোধ বিষয়ক ট্রাইব্যুনালসহ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে আইনি কাঠামোর ভেতরে নিয়ে আসার উদ্যোগের কারণে তা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ এই সফলতা অর্জন করেছে মানবপাচার মামলার তদন্ত বৃদ্ধি, পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে সাজা নিশ্চিত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং সব মন্ত্রণালয় ও অংশীজনদের মধ্যে সমন্বয় করছে।
তিনি আরও বলেন, এককভাবে মানবপাচার এবং অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি মনে করি আরও নীতিগত প্রক্রিয়া গ্রহণের মাধ্যমে অধিকতর তদন্ত বাড়িয়ে, বিচার নিশ্চিত করে ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। মানবপাচারের ঘটনা বাংলাদেশ সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সরকার একযোগে কাজ করছে। প্রতিরোধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্সে। এটা নিয়ে আমরা কখনও আপোষ করব না।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পাচারের ঝুঁকিতে আছে। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন এই সমস্যার টেকসই সমাধান।
[204252]
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বলেন, মানবপাচার একটি জঘণ্যতম অপরাধ। অনিয়মিত অভিবাসন কখনই কাম্য নয়। মানবপাচার প্রতিরোধে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ লিডিং রোলে রয়েছে। বাংলাদেশে রোহিঙ্গারাও মানব পাচারের শিকার হচ্ছেন। মানব পাচার প্রতিরোধে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, মানবপাচার ভয়াবহ একটি অপরাধ। মানব পাচার প্রতিরোধে ইউরোপীয় ইউনিয়নও নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। যৌথভাবে মানবপাচার প্রতিরোধের করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল আলম, পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম, আইওএম বাংলাদেশের অফিসার ইন চার্জ ফাতিমা নুসরাত গাজ্জালী ও ইউএনওডিসির দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক প্রতিনিধি মারকো টেজিরিয়া উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মানবপাচার পরিস্থিতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের উপ সচিব ঈশিতা রনি এবং ইউএনওডিসি’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কোঅরডিনেটর মাহাদী হাসান।
সোনালীনিউজ/এআর