সব প্রস্তুতি সম্পন্ন

পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলবে কাল থেকে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৩, ০৮:২৪ এএম

ঢাকা: ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু করবে আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে। এ দিন বেলা ১১টায় মাওয়া স্টেশনে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দুপুর দেড়টায় উদ্বোধনী ট্রেনে চড়ে তিনি রওনা হবে ভাঙ্গার উদ্দেশে।

উদ্বোধনী ট্রেনে পাওয়ার কারসহ থাকবে চীন থেকে আনা ১৪টি বগি। এসব বগিতে অন্যান্য অতিথি থাকবেন। ট্রেনটি ভাঙ্গা রেলস্টেশনে পৌঁছাবে দুপুর আড়াইটার দিকে। ট্রেন থেকে নেমে বিকাল ৩টায় ভাঙ্গা স্টেডিয়ামে দলের জনসভায় যোগ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে।’

পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ দিয়ে তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রেলওয়ে। তবে উদ্বোধনের অন্তত তিন সপ্তাহ পর ট্রেনে যাত্রী পরিবহন শুরু হতে পারে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি ভাড়াও। স্ল্যাব অনুযায়ী ভাড়ার প্রস্তাব দিয়েছে এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটি। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পর ভাড়া নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার কথা রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে পদ্মা সেতুতে ঢাকা-খুলনা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও ঢাকা-যশোর রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেসে যাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা রয়েছে। ট্রেন দুটি বর্তমানে ঢাকা, টঙ্গী, জয়দেবপুর, যমুনা বঙ্গবন্ধু সেতু, ঈশ্বরদী, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে গন্তব্যে যায়। রেল সংযোগ চালুর পর পদ্মা সেতু হয়ে যাবে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা-রাজশাহী রুটের ‘মধুমতি এক্সপ্রেস’কে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা পর্যন্ত চালানোর প্রস্তুতি রয়েছে।

বর্তমানে ঢাকা-খুলনা রুটে ‘চিত্রা এক্সপ্রেস’ এবং ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ চলাচল করে। এই দুই ট্রেন যশোর হয়ে খুলনায় যায়। ঢাকা-যশোর রুটে চলাচল করে ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’। এই ট্রেনটি খুলনায় যায় না। সীমান্তবর্তী বেনাপোল জংশন পর্যন্ত যায়। ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ এবং ‘বেনাপোল এক্সপ্রেস’ পদ্মা সেতু রেল সংযোগ চালুর পরদিন থেকেই চলবে না। কারণ পদ্মা রেল সংযোগের সব স্টেশন এবং সিগন্যাল এখনো প্রস্তুত হয়নি। পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হলে দূরত্ব কমবে ঢাকা-খুলনা রুটে।

বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তঃদেশীয় রেল যোগাযোগ উন্নয়ন করা এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নতুন চারটি জেলা- মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল যশোরের সঙ্গে যুক্ত হবে। ভাঙ্গা-পাচুরিয়া রাজবাড়ী সেকশনটি পদ্মা সেতু হয়ে সরাসরি সংযুক্ত হবে ঢাকার সঙ্গে।

২০১৮ সালের ১৪ অক্টোবর পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প পদ্মা সেতুর চেয়েও ব্যয়বহুল। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সংশোধিত মেয়াদ ধরা আছে। ২০১৮ সালের ২৭ এপ্রিল ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ওই বছরের ৩ জুলাই কাজ শুরু হয়। এর আগে ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি সরকারের অগ্রাধিকারভুক্ত হয়েছে। প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)। গত মাস পর্যন্ত সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ছিল ৮৩ শতাংশ।

এমএস