ঢাকা : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সারা দেশে দুই হাজার ৭১২ জন প্রার্থীর জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বৈধতা পেয়েছেন ১৯৮৫ জন প্রার্থী, অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৭৩১ জন প্রার্থীকে।
অবৈধ ঘোষিত প্রার্থীদের অধিকাংশের মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পেছনে কারণ এক পার্সেন্ট ভোটারের সমর্থন আদায় নিয়ে সমস্যা।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে আপিল করতে আসা অবৈধ ঘোষিত প্রার্থীদের এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
প্রার্থীরা বলছেন, নির্বাচন কমিশনের এ শর্ত বাংলাদেশ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশ সংবিধানে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগের কথা বলা হলেও নির্বাচন কমিশন স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনের স্বাক্ষরিত আবেদন জমা দিতে বলেছে। এতে ভোটের আগেই ভোটারের সমর্থন ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।
[212677]
অনেক প্রার্থী বলছেন, এক শতাংশের বেশি ভোটারের সমর্থনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হলেও তা জেলা নির্বাচন কমিশন পুলিশ ও প্রশাসন দিয়ে যাচাই-বাছাই করায় অনেকে ভয় পেয়েছেন। স্বাক্ষর করা অনেকে কর্মজীবী হওয়ায় যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে তাদের পায়নি জেলা নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে সোমবার (৪ ডিসেম্বর)। যাচাই-বাছাইকালে মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দেওয়া সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আজ মঙ্গলবার থেকে আবেদন করতে পারছেন প্রার্থীরা। এ লক্ষ্যে ইসিতে ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি আলাদা আলাদা বুথ করেছে সংস্থাটি। এর বাইরে আলাদা একটি কেন্দ্রীয় বুথ রয়েছে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাতিল ও গ্রহণাদেশের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী বা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান রিটার্নিং অফিসারের আদেশে সংক্ষুব্ধ হয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ৫ ডিসেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত (সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে) নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি আকারে (আপিলের মূল কাগজপত্র এক সেট ও ছায়ালিপি ছয় সেটসহ) আপিল দায়ের করতে পারবেন। এজন্য ১০টি অঞ্চলের জন্য ১০টি বুথ করা হয়েছে নির্বাচন ভবনে। ১০ জন কর্মকর্তার কাছে আপিল আবেদন জমা দিতে হবে।
[212600]
১০ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ১০০টি করে আপিল শুনানি হবে ক্রমানুসারে।
আপিল আবেদনগুলোর শুনানি শেষে আপিলের ফল মনিটরে প্রদর্শন, রায়ের পিডিএফ কপি ও আপিলের সিদ্ধান্ত রিটার্নিং অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের ই-মেইল অ্যাকাউন্টে প্রেরণ এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এছাড়া আপিলের রায়ের অনুলিপি শিডিউল অনুযায়ী নির্বাচন ভবনের অভ্যর্থনা ডেস্ক থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি হবে ৫ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনী প্রচার চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি (রবিবার)।
এমটিআই