মুক্ত নাবিকরা যেভাবে দেশে ফিরবেন

  • চট্টগ্রাম প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ১৪, ২০২৪, ১১:৫৫ এএম

চট্টগ্রাম : সোমালিয়ার জলদস্যুদের থেকে মুক্তি পাওয়া এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি দুবাই পৌঁছাতে ৬ থেকে ৭ দিন লাগতে পারে। দুবাই পৌছার পর জাহাজে থাকা ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাস করা হবে। আর মাল খালাসের পর জাহাজটি চট্টগ্রামে চলে আসতে পারে। তখন জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া ২৩ নাবিক চাইলে জাহাজ চালিয়ে চট্টগ্রামে আসতে পারে অথবা তারা যদি বিমানে করে দুবাই থেকে চট্টগ্রামে আসতে চায় সেই সুযোগও দেয়া হবে। এসবের সবই নির্ভর করছে নাবিকদের ইচ্ছের উপর। এমনটাই জানিয়েছেন কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী ক্যাপ্টেন মেহেরুল করিম।

রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে ৯টায় এক প্রশ্নের জবাবে ক্যাপ্টেন মেহেরুল করিম বলেন, সোমালিয়া থেকে মুক্তির পর জাহাজটি দুবাই বন্দরে যাচ্ছে। আর সেখানে পৌঁছতে ছয় থেকে সাত দিন সময় লাগতে পারে।

[221293]

ওখানে পৌঁছার পর ৫৫ হাজার টন কয়লা খালাসে কি পরিমান সময় লাগবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রায় তিন থেকে চারদিন সময় লাগবে কয়লা খালাসে।

নাবিকরা কি দুবাই থেকে বিমানে করে চট্টগ্রামে আসবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। জাহাজটি দুবাই থেকে চট্টগ্রামে ফিরে আসবে। সেক্ষেত্রে নাবিকরা সম্মতি থাকলে তারা জাহাজটি চালিয়ে নিয়ে আসতে পারে।’

চট্টগ্রামে আসতে কি পরিমাণ সময় লাগতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে ক্যাপ্টেন মেহেরুল করিম বলেন, ‘দুবাই থেকে চট্টগ্রামে আসতে প্রায় সাত দিন সময় লাগে। এর সবই নির্ভর করছে নাবিকদের ইচ্ছের উপর। নাবিকরা নিজে জাহাজ চালিয়ে এলে আমাদের বিকল্প টিম পাঠাতে হবে না।’

এদিকে আজ ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে এমভি আবদুল্লাহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে দুবাই বন্দরের দিকে যাত্রা শুরু করে। এর আগে হেলিকপ্টার দিয়ে দস্যুদের কাছে ডলার পাঠানো হয়েছিল। ডলার পাওয়ার পরই জাহাজ ও জিম্মি ২৩ নাবিককে মুক্তি দেয় দস্যুরা।

[221222]

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহর সেকেন্ড অফিসার মোজাহেদুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রথম অস্ত্র ঠেকিয়েছিল সোমালিয়ান জলদস্যুরা। সেদিন দুপুর তিনটা ১২ মিনিটে অস্ত্র ঠেকানোর পর জাহাজের ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ সিটাডেলে আশ্রয় নেওয়া সব নাবিকদের ব্রিজে আসার নির্দেশনা দেন। সেকেন্ড অফিসার ও ডিউটি ইঞ্জিনিয়ার সিটাডেলে আশ্রয় নেয়নি। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে দুবাই যাচ্ছিল। জাহাজটি ছিনতাইয়ের পর সোমালিয়ার উত্তর—পূর্ব উপকূলের গ্যরাকাদে নোঙ্গর করে। এখনো একই এলাকায় অবস্থান করছে।

[221221]

জাহাজ থেকে নাবিকদের উদ্ধারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্রিটিশ রয়েল নেভি এবং ভারতীয় নৌ বাহিনী অভিযান চালানোর ইচ্ছা ব্যক্ত করলেও জাহাজ মালিক ও বাংলাদেশ সরকার অভিযানের অনুমোদন দেয়নি। রক্তপাতহীন জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতেই মালিক পক্ষের কাছ থেকে অভিযানের অনুমোদন দেয়া হয়নি। এখনো আন্তর্জাতিক বাহিনী এমভি আবদুল্লাহকে নজরদারিতে রেখেচে।

এর আগে একই মালিক গ্রুপের এমভি জাহান মনিকে ২০১০ সালে জিম্মি করেছিল একই গ্রুপের জলদস্যুরা। সেবারও মুক্তিপণ দিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। সোমালিয়ান জলদস্যুরা ২০১৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৮টি জাহাজ জিম্মি করেছিল। এর আগে ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে জিম্মি করেছিল ৩৫৮টি জাহাজ।

এমটিআই