আট বছরেও শেষ হয়নি শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার বিচার কার্যক্রম

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৪, ০৯:০৭ এএম

ঢাকা: আজ ৭ জুলাই, রোববার। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকায় জঙ্গি হামলার অষ্টমবছর। দীর্ঘ এই সময়েও শেষ হয়নি মামলাটির বিচার কার্যক্রম। ফলে আটকে আছে বিচার কার্যক্রম। সে দিনের সেই ঘটনার দুঃসহ স্মৃতি এখনো ভুলতে পারেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। স্পর্শকাতর এই মামলায় ১০১ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে ৬০ জনের।

এদিকে বিচারের অপেক্ষায় আশার প্রহর গুনছেন সেদিনের হামলায় নিহতদের পরিবার। সেই দিনের জঙ্গি হামলায় নিহত স্থানীয় গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিকের স্বামী গৌরাঙ্গনাথ ভৌমিক স্ত্রী হত্যার বিচার দেখে যেতে পারেননি। অসুস্থ অবস্থায় গত ১৮ জুন ময়মনসিংহ মেডিকেলকলেজ হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার মামাতো ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মাধব গোবিন্দ দাস। এখন তাদের দুই ছেলে বাসুদেব ভৌমিক ও শুভদেব ভৌমিক মায়ের হত্যার বিচার দেখার অপেক্ষায়।

[227056]

সেই সময় শুভদেব ভৌমিক ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। তিনি বর্তমানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ছেন। আর আগের সংসারের ছেলে বাসুদেব ভৌমিককে সরকারের উদ্যোগে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা বলেন, বিচার দেখার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বাবা মারা গেছেন। এখন তারা অপেক্ষায় আছেন মায়ের এই করুণ মৃত্যুরবিচার দেখার।

সরকারপক্ষের আইনজীবী এপিপি আবু সাঈদ ইমাম বলেন, আসামিদের কারও কারও নামে গুলশানের হলি আর্টিসান মামলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে। এজন্য সবসময় নির্ধারিত তারিখে কিশোরগঞ্জের সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির করা যায়নি। এ কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাতে জঙ্গিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। আগামী ৩১ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে বলে জানান তিনি।

২০১৬ সালের ৭ জুলাই ছিল ঈদুল ফিতরের জামাতের ১৫ মিনিট আগে সকাল পৌনে ৯টায় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের অদূরে মুফতি মোহাম্মদ আলী মসজিদের সামনে পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পুলিশের দুই কনস্টেবল আনসারুল হক ও জাহিরুল হককে। পরে জঙ্গিরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিকের মৃত্যু হয়। সেই দিন বন্দুকযুদ্ধে আবীর রহমান (২৩) নামে কুমিল্লার দেবিদ্বার এলাকার এক জঙ্গি নিহত হয়েছিলেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেফতার হয়েছিলেন দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এলাকার শফিউল ইসলাম (২২) ওকিশোরগঞ্জ শহরের মনিপুরঘাট এলাকার জাহিদুল হক তানিম (৩২) নামে দুই জঙ্গি। 

ঘটনার তিনদিন পর তৎকালীন পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.সামছুদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। পুলিশ ২০১৮ সালের ১১ আগস্ট আদালতে ২৪ জনের নামে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে শোলাকিয়া হামলায় সরাসরি অংশ নেওয়া শফিউল ইসলামসহ ১৯ জন মারা যান। বর্তমানে চার্জশিটভুক্ত পাঁচ আসামি দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি।

এমএস