ঢাকা : তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার প্রেক্ষাপটে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ খালি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর উপস্থিতিতে তাবলিগের সাদপন্থিদের এক বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পরে একই জায়গায় তাবলিগের জুবায়েরপন্থিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। আইজিপি বাহারুল আলমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও বৈঠকে উপস্থিত আছেন।
প্রথম দফার বৈঠকের পর সাদপন্থিদের প্রতিনিধি রেজা আরিফ উপদেষ্টার উপস্থিতিতেই বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অনুরোধে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। হতাহতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। আমরা মাঠ ছেড়ে দিচ্ছি।
[239926]
তিনি বলেন, “অতীতে আমরা সরকারের সমস্ত কথা রেখেছি, সরকারের এই কথাটুকুও আমরা রাখছি। আমরা এরই মধ্যে সেখানে উপস্থিত সাথীদের বলে দিয়েছি মাঠ ছেড়ে দেওয়ার জন্য। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সহযোগিতা করছে।
এখন এখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সরকার মাঠের দায়িত্ব নেবেন, কেউ এখন মাঠে থাকবে না।
তাবলিগের জুবায়েরপন্থিদের উদ্দেশে রেজা আরিফ বলেন, উনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সরকারি সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিয়েছি, উনারাও যেন ইসলামের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে কোনো রকম সমস্যার চেষ্টা না করেন। উনারা যেন রাস্তায় নেমে না আসেন, উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার না করেন।
তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় তাবলিগ জামাতের মাওলানা জুবায়ের আহমদ ও দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা।
তাতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন এবং অনেকে আহত হয়েছেন বলে গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার মো. নাজমুল করিম খান জানিয়েছেন।
[239929]
টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি হাবিব ইস্কান্দার বলেন, মঙ্গলবার ইজতেমা ময়দানে অবস্থান করছিলেন মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারিরা। পরে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারিরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামারপাড়া ব্রিজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকেন।
সে সময় মাঠের ভেতর থেকে জুবায়ের অনুসারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। জবাবে সাদের অনুসারীরাও পাল্টা হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে সাদপন্থিরা মাঠে প্রবেশ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাসদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
[239918]
দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠকের পর সাদপন্থিদের মুরুব্বি আরিফ রেজা বলেন, যারা আহত হয়েছেন, নিহত হয়েছেন, তারা কোন পক্ষের কে ছিলেন না ছিলেন তার চেয়ে এই মুহূর্তে অনেক বেশি জরুরি যারা মারা গেছেন, আল্লাহ তাদের মাফ করে দিন। অনেক বেশি জরুরি সবাই যেন সহজে বেরিয়ে যায়, কোনো প্রবলেম যেন না তৈরি হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মুসলমান হিসেবে দেশের নাগরিক হিসেবে দুঃখ প্রকাশ করছি। যা হয়েছে এটা অনুচিত হয়েছে। মুসলমান মুসলমান মারামারি, তবলীগের সাথীরা মারামারি– এটা অবশ্যই উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড যেন না হয়, সে চেষ্টা আমাদের থাকবে।
এমটিআই