ঢাকা : যে কোন বিজয়ই আনন্দের এবং সে বিজয় যদি স্বাধীনতার মানে দেশের বিজয় হয় তবে তা আরও বেড়ে যায়। হাজার বছর ধরে বাঙালীর কোন আলাদা রাষ্ট্র ছিলো না। দীর্ঘ সংগ্রামের পরে জাতির জনকের নেতৃত্বতে আমরা একটা দেশ পেলাম। শুধু দেশ থাকলেই তো আর হয় না। দেশের মানুষের মনন গঠন করতে হয়। মনন গঠন করতে প্রথমে আসে শিক্ষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য।
নতুন দেশের কোন কিছুই চূড়ান্ত করতে সময়ের দরকার হয় কিন্তু বাংলাদেশের ট্র্যাজেডি হলো তার আগেই জাতির জনককে হত্যা করা হয়। বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি যারা স্বাধীনতার সময় আমাদের বিরোধিতা করেছিলেন তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। শুরু হয় ইতিহাসকে ভুল পাঠের নিয়ত কানুন। যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেখান থেকে আমরা দূরে সরে যাই।
মানুষকে যা শেখানো যায় সে মূলত তাই শিখবে; আর এ শেখাটা রাজনৈতিক। রাজনীতি আমাদের যা শেখায় দেশের মানুষ, তাই শেখে।
৭৫ পরবর্তী সময়ে আমাদের রাজনৈতিক পরাজয়ের সাথে আমাদের অর্থনৈতিক পরাজয়ও হয়ে যায়। সাথে শিক্ষাসহ সকল কিছু চলে যায় স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে। ৭১ এর বিপ্লব ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। জনগণ দেখলেন বীরদের পরাজয়, এ পরাজয়ের ভেতরে স্বার্থপরার্থে বীজ বপিত হয়।
আমরা অপেক্ষা করতে শুরু করলাম স্বাধীনতার স্বপক্ষের ক্ষমতায় আসার জন্য কিন্তু সেখানেও আমরা পুরোপুরি সফল হই নাই। ততদিনে আমাদের ভূরাজনৈতিক বা বৈশ্বিক রাজনৈতিক কারণে আমরা স্বাধীনতার ট্রেন থেকে ছিটকে পরেছি। তাহলে স্বাধীনতা কি আমরা পাইনি? নিশ্চয়ই পেয়েছি কিন্তু শুধু একটা ভূখণ্ডগত টেরিটরি আমাদের আছে । ভূখণ্ড স্বাধীনতার একটা বড়ো উপাদান। অর্থনৈতিক মুক্তি, শিক্ষার মাধ্যমে রুচিশীল জাতি আমরা গঠন করতে ব্যর্থ হয়েছি।
অর্থই সব আর অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হলে মেধাবী লোকের প্রয়োজন হয়। ৪৭ সালে আমাদের একটা বড়ো অংশ মেধাবী প্রতিবেশী দেশে স্থায়ীভাবে চলে যায়। ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত এ স্রোত থামেনি। ৭১’ চলে যায় উল্লেখযোগ্য অংশ। এখনো আমাদের মেধাবীগণ চলে যায় উন্নত বিশ্বে সুতরাং আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠান চলে মধ্যম বা নিম্ন-মধ্যম মানের লোক দিয়ে; এ কারনে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষে কখনো যেতে পারবো বা আদও যেতে পারবো কিনা আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
তবুও ডিসেম্বর আমার আনন্দের, আছে স্বাধীন হওয়ার গৌরবদৃপ্ত অহংকার। যদিও পুরোপুরি স্বাধীনতা দেশের জনগণ এখনো পায়নি।
সোনালীনিউজ/এসএন