ঢাকা : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নেতারা অনেকে আপোস করে বসে আছি। বেগম খালেদা জিয়া আপোস করেননি। কিন্তু আমরা অনেকে আপোস করে বসে আছি। আজকে দুঃখের বিষয় খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী তিনি বছরের পর বছর জেলে কাটালেন আমরা কী করতে পেরেছি?
সোমবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য এবং গৃহবন্দি থেকে নিঃশর্ত মুক্তির করণীয়’ শীর্ষক সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান সমাজকল্যাণ পরিষদ।
তিনি বলেন, ভোটে নয়, রাজপথেই গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটাতে হবে। যদি আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শের অনুসারী হয়ে থাকি তাহলে দলেও তার প্রতিফলন থাকতে হবে। জিয়াউর রহমানের মত হতে হবে, তার মতো সাহসী হতে হবে। দেশের স্বার্থে কখনো কোনো ধরনের আপোষ করা যায় না।
চলমান নির্বাচনী ব্যবস্থায় নির্বাচনে দলের অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাফিজ উদ্দিন বলেন, কেন আমরা এই ধরনের নির্বাচনে যাই? যখন নির্বাচনে যাওয়া উচিত না তখন যাই, যখন যাওয়া উচিত তখন যাই না। যে দিন সংসদে যাওয়া উচিত না সেই সংসদে গিয়ে আমরা বসে থাকি। যার জন্য আজকে বিএনপিকে চার‘শ ভোট দেয়। সিরাজগঞ্জ-১ আসনে ওদের প্রার্থী পেয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার ভোট আর আমাদের প্রার্থী পেয়েছে ৪‘শ ভোট। আরে বিএনপির এজেন্টই তো হাজারেরও বেশি। আমাদের কোনো এজেন্ট ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেন না, কোনো ভোটার ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না, এমনকি আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না। এই হলো বাংলাদেশের গণতন্ত্র।
তিনি বলেন, জনগণের যেহেতু ভোটের মাধ্যমে আর পরিবর্তনের সুযোগ নেই। যত দিন এই সরকার আছে ততদিন ভোট কেন্দ্রে সাধারণ নাগরিক যেতে পারবে না। সুতরাং একমাত্র উপায় গণঅভ্যুত্থান। জনগণ যদি রাস্তায় নেমে আসে। দুই লাখ লোক দুইদিন রাস্তায় থাকেন পালিয়ে যাবে তারা (আওয়ামী লীগ সরকার)। সেই সাহস সঞ্চার করে আসুন আমরা আগামী দিনে এই সরকারকে বিতাড়িত করতে রাজপথে আবার নেমে আসি।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, সবচাইতে বড় অশনিসংকেত দেখতে পারছি- বিএনপি তো এখন ডাক দিলে রাস্তায় নামাতে পারে না। আমাদের এতো শক্তিশালী ছাত্রদল ছিল, তাদেরকে রাস্তায় নামাতে পারে না। কেন তাদের নামাতে পারে না আমি জানি না। ইসলামী মৌলবাদীদের মিছিল দেখেন, তাদের সংখ্যা দেখেন রাজপথে। এই রাষ্ট্র যদি উদার রাজনৈতিক ধারা থেকে বেরিয়ে গিয়ে আবার মোল্লাদের খপ্পরে পড়ে সেজন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দায়ী থাকবেন। আমরা এই ধরনের পরিস্থিতি চাই না। আমরা চাই, সরকার পরিবর্তন হোক ভোটের মাধ্যমে।
হাফিজউদ্দিন আরও বলেন, মেধাবী লোক হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের শত্রু। ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে (নোবেল বিজয়ী) সারা বিশ্ব কত সম্মান করে। আর আমাদের দেশে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়, তাকে পালিয়ে বেড়াতে হয়, তাকে সুদখোর বলা হয়।এ ভাবে তো তারা দেশ থেকে মেধাবী ব্যক্তিদেরকে বিতাড়িত করে দিয়ে মূর্খের রাজত্ব তারা কায়েম করেছে, আরো করবে ভবিষ্যতে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন খোকনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সাবেক প্রতিমন্ত্রী আনম এহছানুল হক মিলন, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, কৃষকদলের কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ