ঢাকা : আলাপ-আলোচনা করে সরকারের সঙ্গে ভাস্কর্য নিয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধান চায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একটি চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভাস্কর্য বিষয়ে ফতোয়া জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নায়েবে আমির নুরুল ইসলাম জিহাদী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো প্রাণীর ভাস্কর্য নির্মাণের বিষয়টি ইসলামে নেই বলে শীর্ষ আলেমদের পক্ষ থেকে সর্বসম্মত ফতোয়া প্রদান করা হয়। যা একটি পত্র দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম জিহাদী হেফাজতের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। কাসেমী সংবাদ সম্মেলনে আসেননি। তবে হেফাজতের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে হেফাজত নেতা মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমরা আশা করি, সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই এই সমস্যার সমাধান হবে।’
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আলেমদের শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক উপদেশ এবং দাবিকে বিতর্কিত করার জন্য কুষ্টিয়ায় কে বা কারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার মাধ্যমে একটি ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছে। হেফাজতে ইসলাম এভাবে নিজ হাতে আইন তুলে নেওয়া বা গোপন তৎপরতার পথ অনুসরণ ও অনুমোদন করে না।’
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখার স্বার্থে ও দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে উল্লিখিত সমস্যা সমাধানে সরকার যথাসাধ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ভাস্কর্য বিষয়ে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক এবং ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীমের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান নুরুল ইসলাম।
‘সেক্যুলার শব্দের আড়ালে’ আশ্রয় নেওয়া ইসলামবিদ্বেষীদের নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়ে নূরুল ইসলাম বলেন, অন্যথায় দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ এই কুচক্রী মহলকে রুখে দিতে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে। মাওলানা নূরুল ইসলাম বলেন, হেফাজতে ইসলাম ভাস্কর্য নির্মাণ বিষয়ে সরকারকে ইসলামের আকিদা, ইমান ও শিক্ষার বিরুদ্ধে গিয়ে পৌত্তলিকতা প্রসারের রাষ্ট্রীয় গোমরাহির পথ পরিহার করার আহ্বান জানাচ্ছে।
এ সময় হেফাজত নেতারা বলেন, ইসলাম বিদ্বেষী চিহ্নিত মহল সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম সমাজের বিরুদ্ধে লাগামহীনভাবে অভদ্র ও অশোভন বক্তব্য দিচ্ছেন এবং বিষেদগার করছেন। তারা মরহুম শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক ও মরহুম সৈয়দ ফজলুল করিম পীর সাহের চরমোনাইসহ দেশের শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও জঘন্য কটূক্তি করছে এবং ঘৃণা ছড়াচ্ছে। এতে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের নেতা আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক, মাওলানা মামুনুল হক প্রমুখ।
সোনালীনিউজ/এমএএইচ