বিদ্রোহীরা কখনো নৌকায় চড়তে পারবে না, এটাই শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২১, ০৭:৩৭ পিএম

ঢাকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খেতে হয় আওয়ামী লীগকে। আগ্রহী প্রার্থীরা দলের মনোনয়ন না পেলে কোনো কোনো জায়গায় বিদ্রোহী হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যান। কোনো কোনো জায়গায় দুই, তিন, চার জনের বেশিও বিদ্রোহী প্রার্থী হতে দেখা যায়। এর ফলে দল মনোনীত প্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হন। 

এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহীদের জন্য কঠোর বার্তা দিয়ে মাঠে নামে আওয়ামী লীগ।

কিন্তু তাতেও তেমন কাজে আসছে বলে মনে হয় না। দ্বিতীয় ধাপের ৬০টি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলো অর্ধ-শতাধিক। দিনাজপুরে তিনটি পৌরসভাতেই মেয়র পদে বিদ্রোহী ছিলেন ১৫ জন।প্রথম ধাপের ২৫টির মধ্যে ৮টি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন ১০ জন। যাদের মধ্যে ৩ জন জয় পান। আর দ্বিতীয় ধাপের বিদ্রোহীরা জয় পান ছয়টি পৌরসভায়। 

এমন পরিস্থিতিতে প্রথমধাপের তুলনায় দ্বিতীয়ধাপে সংঘর্ষ বেশি হওয়ায় কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে পৌরসভা নির্বাচন।বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বেশিরভাগ সংঘর্ষের কারণ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা।দল মনোনিত প্রার্থীদের সঙ্গে বিদ্রোহীদের বিরোধের কারণে নির্বাচনী পরিবেশ অশান্ত হয়েছে বেশিভাগ এলাকায়।  

এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে কঠোর হয়েছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে দলের কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে বিদ্রোহীদের বিবেচনায় আনা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।তিনি বলেছেন, বিদ্রোহীরা জয়ী হোক কিংবা পরাজয়, পরবর্তী নির্বাচনে আর মনোনয়ন পাবে না, এটাই আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত।

তবে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও দলের নির্দেশ মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার করলে তাদের পরবর্তীতে অন্যান্য জায়গায় মূল্যায়ন করা হবে।

ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, কোন বিদ্রোহী আর কোনদিন নৌকায় চড়তে পারবে না। যে এমপি নৌকার বিরুদ্ধে বিরোধীতা করা শেখালো, সেই এমপির আর নৌকা নিয়ে নির্বাচন করার বা মনোনয়ন পাবার অধিকার হারিয়ে ফেলেছেন।

জাহাঙ্গীর কবির নানক

দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেছেন, নৌকার পরাজয়ের জন্য যারা জড়িত তাদেরকে কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়নি। দলের ঐক্য সংহতির বিপক্ষে যারা দাঁড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন বলেন, পার্টির ডিসিপ্লিন ফিরে না আসলে, একবার নৌকার বিরুদ্ধে ইলেকশন করে, নৌকার বিরুদ্ধে ভোট দেয়ার অভ্যাস হয়ে গেলে জাতীয় নির্বাচনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

আহমেদ হোসেন

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক জানান, যারা দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে, যারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হবে, সে যতো বড় নেতাই হোন না কেনো? যতো শক্তিশালী নেতাই হোন না কেনো, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বি এম মোজাম্মেল হক

সোনালীনিউজ/আইএ