লকডাউনের আড়ালে ক্র্যাকডাউন চালিয়েছে সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২১, ০৩:৫৬ পিএম

ঢাকা : সরকার নামে মাত্র লকডাউন দিয়েছে কিন্তু এর আড়ালে তারা ক্র্যাকডাউন চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার (১৭ মে) ঠাকুরগাঁও কালিবাড়িস্থ নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে। শুধু দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্যই তারা আজ জনগণকে দুর্ভোগে ফেলেছে।

তিনি দাবি করেন, সরকারের করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করার কোনো ইচ্ছা নেই। এখানে দুটি সুবিধা পায় তারা। একটা হলো- মানুষ যদি মরে যায় মরুক আর অন্যটা হলো- সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যখাতে বিরাট দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করা।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যে প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, সেই প্রণোদনার টাকা তারা লুটপাট করে খায়। আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি- এখানে জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও এনজিওদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ঈদের জন্য সরকার মাত্র তিন দিন ছুটি ঘোষণা করেছে। কিন্তু মানুষ তো থেমে নেই। দুর্ভোগের মধ্যে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে তারা বাড়িতে রওনা হয়েছে। ছুটি শেষে তাড়াহুড়ো করে ঢাকায় ফিরছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, যাদের নিজেদের গাড়ি আছে তাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে সাধারণ জনগণ। সকারের ব্যর্থতার কারণেই আজকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার নামে মাত্র লকডাউন দিয়েছে। কিন্তু এর আড়ালে তারা ক্র্যাকডাউন চালিয়েছে।

তিনি আরও দাবি করেন, ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সরকার নিজেরাই বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে সেটি বিরোধীদের ওপর চাপাচ্ছে। বিরোধীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে গণগ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের ঈদের মধ্যেও জামিন দেওয়া হয়নি।

এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, করোনা বিধিনিষেধ মানাতে পুলিশকে বিচারিক ক্ষমতা দেওয়া আরেকটা বুমেরাং। পুলিশ কী করবে আমরা জানি। মাঝখান থেকে যেটা হবে সাধারণ জনগণের হয়রানি আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, মানুষ খেতে পায় না, অথচ তাকে আপনারা ঘরের মধ্যে বসে থাকতে বলছেন। বসে থাকবে আগে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে দিন। আমরা সরকারকে তাদেরকে এককালীন ৩ মাসে ১৫ হাজার করে টাকা দেওয়ার প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বর্তমানে প্রায় ২ কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। আর বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে সবমিলিয়ে প্রায় ৬ কোটি মানুষ কর্মহীন। এই ছয় কোটি মানুষের জন্য কিন্তু প্রণোদনা দেয়নি সরকার। প্রণোদনা গেছে গার্মেন্টস, ইন্ডাস্ট্রির মালিকদের জন্য।

তিনি বলেন, রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের জন্য প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম। তারা ৭৭ শতাংশ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এই কথাগুলো সরকারকে বলে কোনো লাভ হয় না। সরকারের নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সহ-সভাপতি আল মামুন আলম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সারোয়ার চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মামুনুর রশিদ, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই