বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক নয়

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২২, ০৮:৪৩ পিএম
ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা : বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা এক জিনিস নয়। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধে দেরি করেনি, সময়মতো ঋণ পরিশোধ করার ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার ওপরে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে স্যাটেলাইট টেলিভিশনন চ্যানেল এটিএন বাংলার ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিককের এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, জিএম কাদের সাহেব শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। তিনি কেন উদভ্রান্ত ও বিএনপির রিজভীর মতো কিংবা অশিক্ষিত মুর্খের মতো কথা বললেন সেটি আমার বোধগম্য নয়।

জিএম কাদেরের ‘বাংলাদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে’ ও রুহুল কবির রিজভীর ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন’ পর্যায়ে— এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও বিএনপির রুহুল কবির রিজভী শিক্ষিত মানুষ বলে জানতাম। তারা শিক্ষিত হয়েও অশিক্ষিতের মতো বক্তব্য দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, আমাদের বৈদেশিক ঋণের বিপরীতে সুদের ব্যয় হচ্ছে জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদনে) মাত্র দুই শতাংশ। সরকারি ঋণ হচ্ছে জিডিপির ৩৬ শতাংশ। জিডিপির ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত সরকারি ঋণ নেওয়া যায়। সেই জায়গায় আমাদের ঋণ আছে মাত্র ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ ৫৫ শতাংশের চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ কম আছে। আমাদের বৈদেশিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১৬ শতাংশ। জিডিপির ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ নিরাপদ। সে জায়গায় আমরা বৈদেশিক ঋণ নিয়েছি জিডিপির মাত্র ১৬ শতাংশ। এ অর্থনৈতিক ইনডেক্সগুলো যেসব রাজনীতিবিদরা পড়েন না, তাদের কি বলবো?

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কদিন আগে কানাডাভিত্তিক সংবাদ প্রতিষ্ঠান ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্ট ব্লুমবার্গ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ইনডেক্স প্রকাশ করছে। সেখানে তালিকায় ২৫টি দেশের নাম দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় অনেক বড় বড় দেশ আছে। কিন্তু বাংলাদেশের নাম নেই। এ সংবাদগুলো কি এসব রাজনীতিবিদরা পড়েন না? না পড়েই তারা যেসব বক্তব্য রাখছেন, এগুলো তো গুজব রটানোর সামিল। আমি আশা করবো, শিক্ষিত মানুষগুলো যেন অশিক্ষিতের মতো কথা না বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সেই কারণেই ব্লুমবার্গের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম যে ডাটা সংগ্রহ করেছে সেখানে অনেক বড় বড় দেশ পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা,, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, তুর্কিয়ে (তুরস্ক), মেক্সিকো, মরক্কোসহ বহু দেশের নাম থাকা সত্ত্বেও সেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। আমাদের রাজনীতিবিদ যারা এ নিয়ে কথা বলছেন, তাদের বলবো একটু পড়াশোনা করার জন্য।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা তো আদালতের রায় মানে না। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির আইনজীবীরাই তো আদালতে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল। অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রধান বিচারালয়ে তারা লাথি মেরেছিল। তারা তো আইন-আদালত কোনোটায় মানে না, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে আইনের শাসন আছে বিধায় আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্যকে আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে জেলে যেতে হয়, আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার হয়। বিএনপি আইন আদালত মানে না, সেজন্য তারা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়, আদালতের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। আদালতে শাস্তি পাওয়া সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার প্রশাসনিক ক্ষমতা বলে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। সেজন্য মির্জা ফখরুলের উচিৎ বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো।

নির্বাচন কমিশনের সংলাপে বিএনপির না যাওয়ার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত বিএনপি তো নির্বাচনকেই ভয় পায়। নির্বাচনকে যেহেতু ভয় পায়, সেজন্য নির্বাচন কমিশন সংলাপে যাবে না বলে খবর বেরিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। আশা করবো, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে, তারা ইসি সংলাপে যাবে। সেখানে গিয়ে তাদের ওজর-আপত্তি থাকলে সেটা জানিয়ে আসবে।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ