কারাগারে বসে সমাবেশের খবর জানতে উদ্বিগ্ন ছিলেন ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২২, ১০:০১ এএম

ঢাকা: বিএনপির গণসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের। ভবিষ্যতের আন্দোলন-কর্মসূচির ঘোষণা আসত তারই বক্তব্যে; কিন্তু এর আগেই নাশকতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তিনি কারাবন্দি। কারাগারে বসেই তাকে খবর নিতে হয়েছে সেই গণসমাবেশের। দিনভর টিভি পর্দায় তার চোখ থাকলেও দেখতে পারেননি গণসমাবেশের দৃশ্য। তবে তাকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীদের মাধ্যমে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন, উদগ্রীব ছিলেন প্রায় পুরো সময়। কারা সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।

গত বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় দলটির নেতাকর্মীদের। ওই ঘটনায় হওয়া মামলায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। শুক্রবার দুজনকে আদালতে হাজির করলে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ মাহাবুবুল ইসলাম গতকাল বলেন, ‘বিএনপির ওই দুই নেতা কভিড-১৯-এর নিয়ম অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইন কক্ষে রয়েছেন। তাদের এক সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।’

তিনি জানান, আদালতের নির্দেশনা এবং জেল কোড অনুযায়ী তাদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

কারা সূত্র জানায়, জেল কোড অনুযায়ী ডিভিশন পাওয়ার যোগ্য বন্দিরা কোয়ারেন্টাইন কক্ষেও ডিভিশনের সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে একজন বন্দিকে সাধারণ বন্দির চেয়ে অতিরিক্ত হিসেবে চেয়ার-টেবিল, একটি খবরের কাগজ দেওয়া হয়। তা ছাড়া ডিভিশনের বন্দি বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেখার সুযোগ পান। বিএনপির মহাসচিবও নিয়ম অনুযায়ী এসব সুবিধা পেয়েছেন।

ওই সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যার আগে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়। ততক্ষণ পর্যন্ত ওই দুই নেতা জানতেন না যে, তাদের ১০ ডিসেম্বরের (শনিবার) গণসমাবেশটি রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী সন্ধ্যার আগে ততক্ষণে সেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা রাতে তা জানতে পারেননি। তবে শনিবার সকালে খবরের কাগজে তারা তা দেখতে পান।

কেন্দ্রীয় কারাগারের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, শনিবার সকালে মির্জা ফখরুল ঘুম থেকে উঠেই টেলিভিশন দেখার আগ্রহ দেখান। তিনি বিটিভিতে খবর দেখেন। তিনি বারবারই সমাবেশের খবর জানার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে কারারক্ষীদের সঙ্গেও কথা বলেন। তবে কারাবিধির বাইরে তার জন্য অতিরিক্ত কিছু করার সুযোগ ছিল না কারা কর্তৃপক্ষের।

এদিকে গতকাল দুপুরে বাসা থেকে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার নিয়ে কেরানীগঞ্জে কারা ফটকে যান মির্জা ফখরুলের স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, মেয়ে মির্জা শাফারুহ এবং ব্যক্তিগত সহকারী ইউনুস আলী। তবে তারা তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি, রান্না করা খাবারও দিতে পারেননি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যক্তিগত সহকারী ইউনুস আলী বলেন, ‘মহাসচিব কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে। এ জন্য দেখা করার সুযোগ দেয়নি।’ তিনি বলেন, রান্না করা খাবার নিয়ে গেলেও তা পৌঁছানো যায়নি। তবে শুকনো খাবার গ্রহণ করেছে কারাগারের লোকজন। তারা কারারক্ষীদের মাধ্যমে সমাবেশসহ বাইরের পরিস্থিতি জানানোর চেষ্টা করেছেন। তবে সেই তথ্য পৌঁছেছে কিনা, তা জানেন না।

সোনালীনিউজ/এম