২৩ শর্তে তিন ঘণ্টার জন্য সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৩, ০৯:১৮ পিএম

ঢাকা: এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে বিএনপির ডাকা সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। তবে এর জন্য শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে ২৩টি। সমাবেশের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে তিন ঘণ্টা। সমাবেশস্থল হিসেবে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে পুলিশ হাসপাতাল পর্যন্ত জায়গা ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপির এক আদেশে এই অনুমতি দেওয়া হয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনারের পক্ষে স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্ট টু কমিশনার সৈয়দ মামুন মোস্তফা স্বাক্ষরিত চিঠিটি পাঠানো হয়েছে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে।

[202885]

চিঠিতে বলা হয়, ৯ জুলাই দাখিল করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিম্নবর্ণিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালনসাপেক্ষে ১২ জুলাই দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে (পুলিশ হাসপাতাল ক্রসিং থেকেনাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত মধ্যবর্তী স্থানে) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির উদ্যোগে সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হলো।

বিএনপিকে দেওয়া ২৩ শর্ত

(১) এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।

(২) স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।


(৩) অনুমোদিত স্থানেই সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।

(৪) নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্তসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।

(৫) স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের চারদিকে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।

(৬) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেন্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিং করতে হবে।

(৭) নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রাখতে হবে।

(৮) শব্দ দূষণ প্রতিরোধে সীমিত আকারে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করতে হবে, কোনোক্রমেই অনুমোদিত স্থানের বাইরে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

(৯) অনুমোদিত স্থানের বাইরে প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না।

(১০) অনুমোদিত স্থানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না।

(১১) আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।

(১২) ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।

(১৩) সমাবেশের কার্যক্রম ব্যতীত মঞ্চ্যকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

(১৪) সমাবেশ শুরুর ০২ (দুই) ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে।

(১৫) অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (১৪.০০টা হতে ১৭.০০টা) সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে।

(১৬) কোনো অবস্থাতেই মূল সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

(১৭) আইন-শৃঙ্খলার পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।

(১৮) রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।

(১৯) উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।

(২০) কোনো ধরনের লাঠি-সোটা/ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না।

(২১) আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ও কোনো বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।

(২২) উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।

(২৩) জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

বিএনপির পক্ষ থেকে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৪ ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এবার এক দফার আন্দোলন ঘোষণা করতে যাচ্ছে দলটি। নয়াপল্টনে সমাবেশ থেকে সেই ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছে বিএনপি।

এদিকে সমাবেশে ব্যাপক লোক সমাগম করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। অনেক বছর পর এবারই প্রথম রাজধানীজুড়ে মাইকিং করছে বিএনপি। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকেও তেমন কোনো বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

সোনালীনিউজ/এম