ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দ্রুত সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তালবাহানা করে জনরোষ থেকে ক্ষমতাসীনরা পার পাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভয় দেখায়, কোনো ভয়ে কি কাজ হবে? ভয় দেখিয়ে কোনো কাজ হবে না। আমরা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। কোনো নির্বাচন হবে না।’
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই-চট্টগ্রামে রোডমার্চের সময় বুড়িচং উপজেলার কালাকচুয়ায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকের রোডমার্চ করছে দলটি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার যে ভোটচোর এটা আজ সারা পৃথিবী জানে। কোনো অগণতান্ত্রিক সরকারকে দেশের মানুষ আর চায় না। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার দিতে হবে। এই সরকারের অধীনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না।’
[208286]
সরকার উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কেউ ভালো নেই। লুটেরা, ফ্যাসিবাদী সরকার অত্যাচার নির্যাতন করে বুকের ওপর বসে আছে। তারা উন্নয়নের নামে লুট করেছে, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মতো আইন করে কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার হরণ করেছে। বিচার ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শেষ করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। কথা পরিষ্কার-হাসিনার অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আর ভোট চুরি করতে দেওয়া হবে না। দাবি একটাই আমরা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে চাই। রোডমার্চের মধ্যদিয়ে সরকারকে জানিয়ে দিচ্ছি এখনও সময় আছে পদত্যাগ করেন, নয় তো জনগণ জানে কীভাবে ক্ষমতা থেকে নামাতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র থেকে কিছু আনতে পারেননি জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমেরিকা থেকে সরকার খালি হাতে ফিরেছে। বহু চেষ্টা করেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে পারেনি তারা।
বিনা ভোটে সরকার আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারের অধীনে নির্বাচনের না যাওয়ার বিষয়ে অটল থাকতে হবে৷ মিথ্যা মামলার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। রাজপথ দখল করে এসবের ফয়সালা করতে হবে।
সমাবেশ শেষে দলীয় ও জাতীয় পতকা হাতে কয়েক’শ গাড়িযোগে ছুটে চলে রোডমার্চ। নেতাকর্মীরা পিকআপ, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, মিনি ট্রাক, মোটরসাইকেলে শোডাউন দেন। পথে পথে স্থানীয় নেতাকর্মীদের অভিবাদনের জবাব দেন বিএনপি মহাসচিব।
১৫৫ কিলোমিটার পথে ফেনী, মিরসরাই এবং সীতাকুন্ডের ভাটিয়ারিতে পথসভা হবে। বিকেলে চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়ী গিয়ে রোডমার্চের সমাপ্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াসিনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, মো. শাহাজাহান।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পর বেলা ১১টার দিকে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে জড়ো হন নির্দিষ্ট সময়ের আগে৷ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগান দেন তারা। ওই এলাকার মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ছাড়াও কোথাও কোথাও তোরণও চোখে পড়েছে।
এমএস