ঢাকা: নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কাছে শুধুমাত্র ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ চেয়েছে জাতীয় পার্টি। এটাই মেইন দাবি। এটুকু হলেই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোন অবকাশ নেই, এটাই আমাদের মেইন দাবি, এটুকু হলেই নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কোন অবকাশ নাই বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কিনা, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকবে কিনা, এসব নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সংশয় প্রকাশ করেছেন’ বলে যে খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তার প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ভোট করেছিল অনেক নাটকীয়তার পর। এবার নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি তুলে নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি, আর জাতীয় পার্টি ভোটে আসবে কি না, শুরুর দিকে তা অস্পষ্ট রেখেছিলেন দলটির নেতারা।
[213155]
পরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করার এবং সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দেয়। তবে দলের প্রতিষ্ঠাতা এইচএম এরশাদের স্ত্রী, জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ এবং তার ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ নেতৃত্বের টানাপড়েনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। তাদের বাদ দিয়েই প্রার্থী মনোনয়নসহ ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছেন এরশাদের ভাই, পার্টির বর্তমান চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার কৌশল পাল্টেছে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় কোনো আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা যেন দশম সংসদ নির্বাচনের মত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় না পায়, সেজন্য দলের মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীরা দাঁড়িয়ে গেছেন স্বতন্ত্র হিসেবে। তাদের বলা হচ্ছে ডামি প্রার্থী। কেবল বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টিও শেষে আবার ভোট বর্জন করে কি না, সে বিষয়টিও আওয়ামী লীগকে মাথায় রাখতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন চুন্নু। সেখানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘এই বিষয়ে আমার কোনো কথা বলার সুযোগ নাই। আর আমাদের কে বিশ্বাস করবে কী করবে না সেটা তাদের ব্যাপর। এ বিষয়ে আমাদের কোনো কমেন্টস নাই। নির্বাচন হল সরকার পরিবর্তনের পথ। এইবারের ভোটে যেহেতু বিএনপি আসে নাই, অ্যান্টি আওয়ামী লীগ ভোট অনেক বেশি। সেই ভোট আমরা পাব। এটা আশা করে নির্বাচনে এসেছি। সেই ভোটটা পেতে গেলে সুষ্ঠ ভোটের পরিবেশ দরকার।’
এদিকে এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাঙ্গে দেখা করতে গণভবনে যান রওশন এরশাদ। গণভবন থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের রওশন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’ তবে কী আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
[213127]
সে প্রসঙ্গ ধরে চুন্নু বলেন, ‘উনি যেতেই পারেন। যে কোনো মানুষের যাওয়ার সুযোগ আছে। রওশন এরশাদ সংসদের বিরোধদলের নেতা। তিনি সংসদের নেতার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে যে কোনো সময়ে, যে কোনো বিষয়ে দেখা করতেই পারেন। রওশন এরশাদ গণভবনে যেতেই পারেন এটা খুব ইজি বিষয়, আনকমন বিষয় না।’
চুন্নু আরও বলেন, ‘আসন ভাগাভাগি ও জোটের বিষয়ে জাতীয় পার্টির কোনো কার্যক্রম নেই। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আমরা নিজেদের মতো নমিনেশন দিয়েছি এবং নিজের মতো করে নির্বাচনে যাচ্ছি। আমাদের দল আছে, আমাদের চেয়ারম্যান আছে, দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক সভা ও সমাবেশ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। কাজেই আমার মনে হয় না— আমাদের নির্বাচনের বিষয়ে মাঠে খুব একটা প্রভাব পড়বে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাই জানে— ২০১৯ সালে জাতীয় পার্টির কাউন্সিল হয়। সেই কাউন্সিলের মাধ্যমে গোলাম মোহাম্মদ কাদের পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং কমিটি গঠন হয়। কাজেই সেখানে ক্যু করার সুযোগ কোথায়। কাউকে যদি তার পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে আসা হয়, তবে সেটাকে ক্যু বলা হয়।’
ওয়াইএ