ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশটা আজ কাঁটাতারে ঝুলছে। যেমনটি ফোলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিলো, তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতাও আজ কাঁটাতারে ঝুলছে। দেশটাকে নিয়ে, স্বাধীনতাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, এ থেকে রক্ষা পেতে হলে একাত্তরের মতো জেগে উঠতে হবে।’
শুক্রবার (১০ মে) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়।
[223048]
‘আমেরিকার মতো দমনের জন্য পুলিশের প্রতি আমি যদি নির্দেশ দেই কেমন হবে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে সমাবেশে গয়েশ্বর বলেন, তাদের এই নির্দেশের পর কিন্তু আমেরিকার এই পুলিশই হাঁটু গেড়ে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
‘বিএনপি চলছে রিমোট কনট্রোলের মাধ্যামে’ ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির রিমোটতো তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার হাতে। আপনাদের রিমোট কনট্রোল কি মোদির কাছে। আপনি ওবায়দুল কাদের নিজেই বলেছেন ভারত না থাকলে আপনারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন করতে পারতেন না। ভারতই আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে।
গয়েশ্বর বলেন, সরকার বিএনপি ও তারেক রহমানের নাম শুনলেই ভয় পায়। তাই দুদিন পরপর তারেক রহমানকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আমাদের কর্মীরা হতশ নয়। আজকে মামলা চালাতে চালাতে কর্মীরা সংসার চালাতে পারে না, নিজের চিকিৎসা চালাতে পারে না। তারপরও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যত জুলুম, যত উৎপাত আসুক তা মোকাবিলা করে দাঁড়ানো শক্তি তাদের আছে।
[222996]
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, অনেকে বলেন উনার (প্রধানমন্ত্রী) পায়ে মাটি নেই। থাকবে কী করে? জনগণ বা মাটির সাথে তো তার কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণকে তো উনার দরকার নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাচনে গোপালগঞ্জে শেখ সেলিমের প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও পরে রেহানার প্রার্থীকে জয়ী করা হয়।
ভোটকেন্দ্রে ভোটার না থাকলেও কেন্দ্রের ভিতরে ঠিকই চলেছে ভোট ডাকাতি। ৩ পার্সেন্ট ভোটকে ৪০ পার্সেন্ট দেখানোর জন্যই ফিরি লাইসেন্স নিয়ে সরকার সমর্থকরাই এসব সিল মেরেছে।
সাবেক আইজিপি বেনজির প্রসঙ্গে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ব্যারিস্টার সুমন কে? উনি কেনো তার অবৈধ সম্পদ বের করার জন্য চিঠি দিলেন? মানুষে বলে প্রধানমন্ত্রী এ চিঠি দেওয়াইছেন। ভাগে নাকি কম পড়েছে। আজকে এসব চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের পুলিশ ধরে না, তাদের নামে মামলা হয় না, আর আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, আপনারা যে আচরণ করেছেন ক্ষমতার পরিবর্তন হলে তার ১০ ভাগের একভাগ আচরণ আপনাদের সঙ্গে করলে তা সহ্য করতে পারবেন? তাই সীমা লঙ্ঘন করবেন না। তাই বলছি জনগণের সঙ্গে থাকুন, ন্যায়ের পথে থাকুন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
আইএ