ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযমের লেখা বইয়ের একটি অংশ নিয়ে ‘দৈনিক আজকের কাগজ’র একটি প্রতিবেদন ভাইরাল হয়েছে। ‘গোলাম আযম খোদার ওপর খোদগারি করছেন’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে তিনি পবিত্র কোরআনের সংস্কার চেয়েছিলেন। যদিও বই ঘেঁটে এর সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এএফপি বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেক এডিটর কদরুদ্দিন শিশির।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি।
কদরুদ্দিন শিশির লিখেছেন, জামায়াতের সাবেক আমির ‘গোলাম আযম কোরআনের সংস্কার চেয়েছিলেন’ দাবি করে একটি সংবাদ প্রতিবেদনের ছবি অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।
কোন কোন পোস্টে দাবি করা হয়েছে, গোলাম আযম তার ‘আদম সৃষ্টির হাকীকত’ নামক একটি বইয়ে লিখেছেন, “কোরআনের সুরা বাকারার ৪র্থ রুকুটি সুরাটির প্রথমে আনা জরুরি ছিল”। অর্থাত—সুরাটির রুকু বিন্যাসে সন্তুষ্ট নন গোলাম আযম।
কিন্তু ‘আদম সৃষ্টির হাকীকত’ বইটিতে ‘সুরা আল-বাকারা কুরআনের শুরুতে কেন?’ শীর্ষক পরিচ্ছদটি পড়ে দেখা গেছে গোলাম আজম সুরাটির রুকু বিন্যাসে কোন অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন নি বরং মুগ্ধতা প্রকাশ করে সুরাটির প্রথম ৪টি রুকু কেন প্রথমেই রাখা ‘খুব জুরুরি ছিল’ তা ব্যাখ্যা করেছেন। (স্ক্রিনশটে বইটির ২৫ ও ২৬ পৃষ্ঠার এতদ্বসংক্রান্ত অংশটুকু দেয়া হলো)।
মজার বিষয় হলো, ‘দৈনিক আজকের কাগজ’ পত্রিকার ১৯৯৮ সালের ৩ আগস্ট কপির একাংশ বলে দাবি করা পেপার কাটিংসদৃশ ছবিটিতে “গোলাম আযম খোদার ওপর খোদগারি করছেন: সুরা আল বাকারার প্রথম ৪টি রুকু গোটা কুরআনের শুরুতে দেয়া খুব জরুরি ছিল” শিরোনামের যে প্রতিবেদনটি দেখা যাচ্ছে তাতেও সুরাটির বিন্যাসে জামাতের এই নেতার কোন অসন্তুষ্টিমূলক বক্তব্য নেই।
প্রতিবেদনে ‘আদম সৃষ্টির হাকীকত বইয়ের একাংশ’ হিসেবে উল্লেখ করা অংশেও দেখা যাচ্ছে গোলাম আজম লিখেছেন, “আল বাকারার প্রথম ৪টি রুকু গোটা কুরআনের শুরুতে দেয়া খুবই জরুরী ছিল। এখন দেখা যাক আন্দোলনের দৃষ্টিতে এ ৪টি রুকু কেন জরুরী।”
অর্থাত, বাস্তবে কুরআনের শুরুতেই (সুরা ফাতিহার পর) সুরা বাকারা রয়েছে এবং সেটির প্রথম ৪টি রুকু যে, যথাযথভাবে একদম সুরার প্রথমে রাখা হয়েছে তা খুব যৌক্তিক এবং ‘জরুরী’ বলে মনে করেছেন গোলাম আযম। কিন্তু আজকের কাগজ-এর প্রতিবেদনে বিষয়টিকে বিভ্রান্তিকরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। [মূল পোস্টটি এখানে আছে]
১৯২২ সালের ৭ নভেম্বর ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে নানাবাড়িতে জন্ম নেওয়া অধ্যাপক গোলাম আযমের পৈতৃক বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিরগাঁওয়ে। ঢাকার ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রজীবন শেষে রংপুর কারমাইকেল কলেজে শিক্ষকতা করেন গোলাম আযম।
এম