অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ড ও গুম

শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম

ঢাকা : জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে পরিচালিত হত্যাকাণ্ড ও গুমের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এদের মধ্যে গুমের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ২২ জনের এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন। যাঁদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রয়েছেন বলে তিনি জানান।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। এর পর থেকে তিনি দেশটিতে অবস্থান করছেন। ছাত্র–জনতার আন্দোলনে সহিংসতায় শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা করছে সরকার। প্রথম ধাপের তালিকায় শহীদ ৮২৬ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে। ওই মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

[241294]

এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিগত ১৫ বছরে দেশে বহু মানুষ গুম হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে একটি কমিশন গঠন করে। ওই কমিশন ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দিয়েছে। তাতে গুমের শিকার ব্যক্তিদের ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর নৃশংস নির্যাতনের চিত্র উঠে আসে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক বিভিন্ন ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা থেকে কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস, এমনকি ৮ বছর পর্যন্ত গোপন বন্দিশালায় আটকে রাখা হতো। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গুমের শিকার ব্যক্তিকে মাথায় গুলি করে হত্যার পর লাশের সঙ্গে সিমেন্টভর্তি ব্যাগ বেঁধে ফেলে দেওয়া হতো নদীতে। আবার কারও লাশ ছিন্নবিচ্ছিন্ন করতে ফেলে রাখা হতো রেললাইনে।

এই কমিশন ১ হাজার ৬৭৬টি গুমের অভিযোগ পেয়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮টি অভিযোগ পর্যালোচনা করেছে তারা। কমিশন এখন পর্যন্ত যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছে, তার মধ্যে ৭৩ শতাংশ ভুক্তভোগী ফিরে এসেছেন। বাকি ২৭ শতাংশ (অন্তত ২০৪ জন) এখনো নিখোঁজ।

এমটিআই