ঢাকা নগর পরিবহনের উদ্বোধন ১ ডিসেম্বর

চালু হচ্ছে নতুন বাস রুট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২১, ০৩:৫৯ পিএম

ঢাকা : চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে শতাধিক নতুন বাস নিয়ে চালু হচ্ছে নতুন রুট ‘ঢাকা নগর পরিবহন’। এটি রাজধানীর বাস রুট রেশনালাইজেশনের প্রথম ধাপ। কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত চলবে এই পরিবহন। ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে কিলোমিটার প্রতি দুই টাকা ২০ পয়সা। এই রুটের দূরত্ব প্রায় ২১ কিলোমিটার।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি। এর আগে নগর ভবনের অনুষ্ঠিত হয় বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ১৮তম সভা।

সভা শেষে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, নগরের সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত এক বছর আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। বিষয়টি অত্যন্ত জটিল ও দুরূহ ছিল। এখন আমরা লক্ষ্য পূরণের কাছাকাছি আছি। ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর একটি পাইলটিং রুট নির্ধারণ করেছি। এ রুটে নতুন নিয়ম এবং পদ্ধতিতে ১২০টি বাস চলবে। সবার প্রচেষ্টায় আমরা এতদূর আসতে পেরেছি।

আগামী ১ ডিসেম্বর এ রুটে বাস চলাচল শুরু হবে, এটা আমরা চূড়ান্ত করেছি। বাসগুলো জয়েন ভেঞ্চারের মাধ্যমে পরিচালিত হবে। পরে পুরো ঢাকায় কয়েকটি কোম্পানির মাধ্যমে বাস চলবে।

নতুন এ রুটে কোনো পুরোনো বাস থাকবে না জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর রুটে পুরোনো বাস চলবে না। এখন এই রুটে যে বাসগুলো চলছে, সেগুলোর মধ্যে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারির পর কেনা বাস থাকবে। বাকি বাসগুলো উঠিয়ে নেওয়া হবে। এর সঙ্গে নতুন বাস যোগ হবে। তাতে পরিবহন মালিকরা সম্মতি দিয়েছেন।

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় গণপরিবহনে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে নগরে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আসবে। চালকের মাঝে প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব থাকবে না। নতুন এই রুটে ৪০টির বেশি যাত্রী ছাউনি করা হবে।’ বাস বে’ হবে ১৬টি। জায়গা সংকটের কারণে বাস বে’র সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না।

এ ছাড়া এ রুটের বাসগুলোর রং কী হবে, তা আগামী ১৪ অক্টোবরের মধ্যে জমা দিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। পরে ২০ অক্টোবর বাসের রং নির্ধারণ করা হবে।

২০১৬ সালের শুরুতে ছয়টি কোম্পানির অধীনে ছয় রঙের বাস নামানোর উদ্যোগ নেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। দেড় বছরের মধ্যে নতুন ৩ হাজার বাস নামানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর আনিসুল হকের মৃত্যুর পর থেমে যায় উদ্যোগ। পরে মুখ থুবড়ে পড়া সেই উদ্যোগই নতুন করে এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।

২০১৮ সালে স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে। আর ১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)-এর নির্বাহী পরিচালককে।

পরে ২০১৯ সালে অন্য একটি প্রজ্ঞাপনে ডিএনসিসির একজন প্রতিনিধিকে অর্ন্তভুক্ত করে ১২ সদস্যের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। আর এই কমিটির সভার মাধ্যমেই চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর-মতিঝিল রুট দিয়ে চালু হওয়ার কথা ছিল পরীক্ষামূলক রুটভিত্তিক এই বাস।

কিন্তু এপ্রিলে করোনার কারণে পরীক্ষামূলক এই কার্যক্রম চালু করা না গেলেও ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ থেকে এটি চালু হবে। সেটিও হয়নি।

রাজধানীতে এখন কাগজে-কলমে ২৯১টি রুটে প্রায় ৩০ হাজার বাস চলে। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী ও রুট ৪২টিতে নামিয়ে আনা হবে। ৯টি ক্লাস্টারে ২২টি কোম্পানি চালাবে এসব বাস। বাসের সংখ্যা কমিয়ে করা হবে ৯ হাজার ২৭টি।

ঢাকা মহানগরীতে রুটগুলোতে প্রতি কিলোমিটারে বর্তমানে ভাড়া ১ টাকা ৭০ পয়সা। তবে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হতে যাওয়া নতুন ব্যবস্থায় এই রুটে অতিরিক্ত ৫০ পয়সা ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। ফলে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া হবে ২ টাকা ২০ পয়সা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই