ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সিটি টোল আদায়কে চাঁদাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছেন এই করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও ঢাকা-৬ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। পাশাপাশি তিনি বলেছেন, কাঁচাবাজারে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করলে দ্রব্যমূল্য কমানো সম্ভব।
শনিবার (১৮ মে) ‘এগিয়ে ছিল দক্ষিণ ঢাকা, স্মৃতির পাতায় ফিরে দেখা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন।
[223506]
সিটি টোলের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেন, সিটি করপোরেশন হচ্ছে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, এটি ব্যবসায়িক কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান বিভিন্নভাবে রাজস্ব আহরণ করে জনগণকে সেবা দিতে। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। আর সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো সেবা নিশ্চিত করার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে। সে কারণে দৃষ্টিভঙ্গির একটি বড় পার্থক্য আছে। সিটি টোল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আদর্শ কর তফসিলে আছে। আমার সময়ে কিন্তু আমি সিটি টোল আরোপ করিনি। আজকে শহরের বিভিন্ন মোড়ে দেখবেন, লাঠি হাতে বাঁশি বাজিয়ে রিকশা, টেম্পু, বাস, ভ্যানগাড়ি থামিয়ে সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি হচ্ছে। আমার সময় কর্তৃত্ব থাকা স্বত্বেও আমি এই কাজটি করিনি, যাতে নাগরিকদের ভোগান্তি না হয়, বিভ্রান্তির মধ্যে না পড়েন, অসহায় হয়ে না পড়েন।
এ সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দেশবাসী সংকটে পড়েছে স্বীকার করেন এই সাবেক মেয়র।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আমাদের মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, গরিব মানুষকে তো বটেই আমাদের নাড়িয়ে দিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য বলেছেন। উনি আমাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, যাতে দ্রব্যমূল্য মানুষের নাগালের ভেতরে রাখা যায়।
করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতিতে আমাদের সবচেয়ে সস্তায় আমিষের চাহিদা মেটায় ব্রয়লার মুরগি, তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছ। যে ব্রয়লার মুরগিটা ১৫০ টাকায় গরিব-দুঃখী মানুষ কিনতে পারত, সেই ব্রয়লার মুরগি এখন ২২৫-২৫০ টাকায় চলে গেছে। এটাকে কমানো সম্ভব। যদি কাঁচাবাজারগুলোতে আমরা চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারি।
সাঈদ খোকন আরও বলেন, কাঁচাবাজারে যে চাঁদাবাজি হয়, সেই চাঁদাবাজি আমরা যদি বন্ধ করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের জনগণকে স্বল্পমূল্যে আমিষ দিতে পারব। এই চাঁদাবাজি যারা করেন, পুলিশ যখন তাদের ধরতে যায়, তখন তারা একটি কাগজ দেখায় সংশ্লিষ্ট করপোরেশনের, যে তারা বৈধতা নিয়ে চাঁদাবাজি করছেন। অর্থাৎ, সিটি টোলের একটি প্রোটেকশন তারা পায়। আমি বলেছি, সিটি টোলের নামে যে চাঁদাবাজি, এটি যদি বন্ধ করা যায়, তাহলে স্বল্প আয়ের মানুষগুলো কাঁচাবাজারের জিনিস শাক, সবজি, ব্রয়লার মুরগি, তেলাপিয়া বা পাঙাশ মাছের দাম আবার কমানো সম্ভব।
ঢাকা- ৬ আসনের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, আমার এলাকায় যিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রয়েছেন তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আপনি অতিসত্বর এই চাঁদাবাজি বন্ধ করেন। সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি আমরা করতে দিতে চাই না।
আইএ