গোনাহ মানুষের জন্য ক্ষতিকর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৩, ১২:২৬ পিএম

ঢাকা : গোনাহ মানুষের জন্য ক্ষতিকর। আর এ ক্ষতির নানা দিক রয়েছে। গোনাহের সামগ্রিক ক্ষতি হলো গোনাহগারের প্রতি আল্লাহতায়ালা অসন্তুষ্ট হন এবং তার থেকে রহমতের দৃষ্টি তুলে নেন। ইসলামের বিধানে গোনাহ আপাদমস্তক অন্ধকার। ভিন্ন ভিন্ন হাদিসে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন গোনাহকে অন্ধকারের সঙ্গে তুলনা করেছেন। যেমন এক হাদিসে এসেছে, ‘জুলুম (অত্যাচার) কেয়ামতের দিনগুলো অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে।’ সহিহ বোখারি : ২৪৪৭

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘যখন কোনো বান্দা গোনাহ করে, তখন তার অন্তরে একটা কালো দাগ পড়ে যায়। অতঃপর যখন সে ওই গোনাহ ছেড়ে দেয় এবং তওবা করে আল্লাহর কাছে মাফ চায়, তখন তার অন্তর দাগমুক্ত হয়ে চকচকে হয়ে যায়। আর যদি আবার গোনাহ করে, তাহলে সে দাগ আরও বাড়তে থাকতে থাকে। একপর্যায়ে সেটা তার পুরো অন্তরকে ছেয়ে ফেলে। এটাই সেই মরিচা, যার কথা আল্লাহতায়ালা নিম্নের এ আয়াতে উল্লেখ করেছেন মোটেই না, বরং তারা যা করে তা-ই তাদের অন্তরে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছে।’ সুরা মুতাফফিফিন : ১৪

[202824]

গোনাহ করার কারণে যখন গোনাহগারের অন্তরে কালো দাগ পড়ে, তখন তার অন্তরে আর হেদায়েতের আলো প্রবেশ করতে পারে না। ফলে সে অবলীলায় অনেক গোনাহে লিপ্ত হয়, এভাবে একপর্যায়ে সে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট হয়ে যায়।

তা ছাড়া পৃথকভাবে একেক গোনাহের একেক ক্ষতি রয়েছে। যেমন ব্যভিচার করলে এক ধরনের ক্ষতি, মানুষের মাল-সম্পদ আত্মসাৎ করলে আরেক ধরনের ক্ষতি।

মোদ্দাকথা, গোনাহ শুধু ক্ষতিই বয়ে আনে। বাহ্যিকভাবে কোনো ক্ষেত্রে কিছু লাভ বা স্বাদ দেখা গেলেও সেটা মরীচিকা বা প্রলেপ মাত্র। গোনাহ করার আগে মনে হবে এটা করলে বুঝি মনে অনেক প্রশান্তি লাভ হবে। কিন্তু সেটা করার পর বোঝা যায় যে, প্রশান্তি অর্জন হবে কি, অস্থিরতার মাত্রা আগের চেয়ে আরও বেড়ে গেছে। গোনাহকে এমন চাকচিক্যরূপে সামনে পেশ করাটা শয়তানের কারসাজি। আর এ শক্তি তাকে আল্লাহই দিয়েছেন। উদ্দেশ্য, মানবজাতিকে পরীক্ষা করা। অতএব এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হলে গোনাহ থেকে আমাদের সম্পূর্ণরূপে বেঁচে থাকতে হবে।

[202822]

এ ক্ষেত্রে আমাদের কর্মপন্থা যেন এমন না হয়, আমরা দেখে দেখে শুধু বড় ও মোটা গোনাহ থেকে বাঁচব আর ছোট এবং বাহ্যিক দৃষ্টিতে তুচ্ছ গোনাহগুলোর ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করব। বরং ছোট-বড় ভেদাভেদে না গিয়ে সব ধরনের গোনাহই পরিহার করে চলব। কেননা কোনো গোনাহই আসলে ছোট নয়। হ্যাঁ, ছোট বলা হয় এ হিসেবে যে, তার শাস্তি অন্যান্য গোনাহ থেকে কিছুটা লঘু এবং হালকা। সেটা একটা আপেক্ষিক ব্যাপার। কিন্তু যত লঘুই হোক দিন শেষে সেটা গোনাহই। বড় গোনাহ দ্বারা যেমন দয়াময় আল্লাহতায়ালা অসন্তুষ্ট হন, ছোট গোনাহ দ্বারাও হন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে গোনাহগুলোকে সাধারণ মনে করা হয়, সেগুলো থেকে বেঁচে থাকো। কেননা আল্লাহর কাছে সেগুলোর ব্যাপারেও প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে।’ সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪২৪৩

তা ছাড়া ছোট গোনাহগুলোকে ছোট হওয়ার কারণে হিসাবের খাতা থেকেও বাদ দেওয়া হবে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘(অপরাধীরা কেয়ামতের দিন আক্ষেপ করে বলবে,) হায় আমাদের সর্বনাশ! এ কেমন নথি রে বাবা! ছোট-বড় একটা গোনাহও বাদ দেয়নি; সব পুঙ্খানুপুঙ্খ লিখে রেখেছে!’ সুরা কাহাফ : ৪৯

সোনালীনিউজ/এমটিআই